চারদিন ধরে নদীতে আটকে আছে তেল ডিপোটি

মুমিনুল ইসলাম বাবু, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:৫১

যমুনায় নাব্য সংকটে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের একটি তেলবাহী জাহাজ কুড়িগ্রামের বকসিগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ীর আনন্দবাজার এলাকায় আটকে আছে। বিআইডব্লিউটিএ’র সহায়তা পেলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে আটকে থাকা জাহাজটি চিলমারী আসতে পারবে বলে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা জানান।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভাসমান তেল ডিপো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি কোম্পানি স্থাপিত হয়। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় তেল সরবরাহ করে আসছিল ডিপো তিনটি। তবে ডিপো স্থাপনের কয়েক বছরের মাথায় পদ্মা তেল কোম্পানিটি বার্জ মেরামতের অজুহাত দেখিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এরপর থেকে মেঘনা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানি দুটি এ অঞ্চলে তেল সরবরাহ করে আসছে। এরমধ্যে যমুনা তেল ডিপোর আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিপোটি তেলশূন্য হয়ে পড়ে। এমনকি ডিপোটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদটিও শূন্য রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে।

অপরদিকে, মেঘনা তেল ডিপোটি গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে তেলশূন্য থাকার পর কোম্পানির এমটি মধুকর নামে একটি জাহাজ দুই লাখ ৬৭ হাজার লিটার তেল নিয়ে চিলমারী অভিমুখে রওনা দেয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি নাব্যতা সংকটের কারণে বকসিগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ীর আনন্দবাজার এলাকায় আটকে রয়েছে (ক্রাক গ্রাউন্ড করে) । সেখান থেকে জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে জাহাজটির সুপারইনডেনডেন্ট সেখানেই তেল খালাসের জন্য চিলমারী ডিপো সুপারের নিকট চিঠি লেখেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট এলাকার কৃষি সেচ মৌসুমে ভাসমান তেল ডিপো থেকে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ৫০০ ব্যারেল বা তিন লাখ লিটার তেল সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন নদ-নদীতে চালিত নৌকা, ড্রেজার মেশিন, জমি চাষের ট্রাক্টর, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চালিত জেনারেটর, মাহেন্দ্র গাড়ি, নছিমন-করিমনসহ বিভিন্ন ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র চালনার জন্য প্রতিদিন আরও প্রায় আড়াইশ থেকে ৩০০ ব্যারেল বা ৫০-৬০ হাজার লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে। ডিপো দুটিতে দীর্ঘদিন থেকে তেল শূন্য থাকায় তেলের চাহিদা পুরণ করতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। এতে প্রায় প্রতিদিন তিন লাখ টাকা অতিরিক্ত লেনদেন হচ্ছে এলাকায় সৃষ্ট তেল বাজারে। শুধু তাই নয়,এভাবে চলতে থাকলে ডিলারদের হাতে থাকা দীর্ঘ দিনের খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতারা হাত ছাড়া হয়ে যাবেন। ফলে চিলমারীর তেল ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রেতাদের নিকট পড়ে থাকা বাকী অর্থ উত্তোলণ করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। এদিকে, ডিপো দুটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন খেটে খাওয়া প্রায় ৩০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে।

চিলমারীর জোড়গাছ বাজারের খুচরা তেল ব্যবসায়ী বাদল, রাশেদুল ইসলাম, মমিনুল, ধীরেন্দ্রনাথ, সুইটসহ অনেকেই বলেন, ‘মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপো থেকে তেল নিতে অতিরিক্ত খরচ না থাকায় আমরা প্রতি লিটার তেল ৬৫ টাকায় বিক্রি করেছিলাম। বর্তমানে দূর থেকে তেল আনতে পরিবহন খরচ বেশি হয়। তাই আমরাও বেশি দামে তেল বিক্রি করছি।’

খুচরা তেল বিক্রেতা মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ডিপো দুটি তেল শূন্য থাকায় জ্বালানি তেলের উপর নির্ভরশীল ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে মেঘনা ওয়েল কোম্পানির ডিপো সুপার (অপারেশন) আইয়ুব আলী বলেন, ‘নাব্যতা সংকটে নদীতে আটকে পড়ায় তেলবাহী জাহাজটি নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে। বিআইডব্লিউটি কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি দিলে জাহাজটি নিরাপদে ডিপোতে আসতে পারবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :