পাপুলের দুর্নীতি: সাবেক এমপি নোমানসহ ১০ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০২১, ১৬:৫৬| আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২১, ১৭:০০
অ- অ+

অবৈধ আর্থিক লেনদেনের দায়ে কুয়েতের আদালতে দণ্ড পাওয়া বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে দুর্নীতির সম্পৃক্ততার অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের জাপা থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নোমানসহ ১০ জনের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাব্যবস্থাপক বরাবর এই চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের মানিলন্ডারিং ইউনিটের মাধ্যমে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।

যাদের হিসাব ফ্রিজ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে তারা হলেন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ নোমান ও তার স্ত্রী শামসুন নাহার, লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও তার স্ত্রী রুবিনা ইয়াসমিন লুবনা, তাদের সন্তান নভেরা শামস চৌধুরী ও নুসাইয়া শামস নেহা, ম্যাকসন্স গ্রুপের মালিক ও সাবেক যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী খোকন ও তার স্ত্রী লায়লা আলী, তাদের সন্তান সানজিদ হাসান ও লাভিল হাসান।

মোহাম্মদ নোমান লক্ষ্মীপুর-২ আসনের (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) সাবেক সাংসদ ছিলেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জোটের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নির্বাচন থেকে সরে যান। স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।

দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সই করা চিঠিতে হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় নথিপত্র তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিষয়ে কানাডা, আমেরিকা, দুবাই ও কুয়েতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো হিসাব আছে কি না বিএফআইইউকে সে বিষয়ে তথ্য যাচাই করতে অনুরোধ করেছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করে দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে-বেনামে দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হিসাবসমূহ স্থগিত করে জরুরি ভিত্তিতে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালতের অনুমতি নিয়ে লক্ষ্মীপুর- ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামের ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধে চিঠি দেয় দুদক। ওই চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে থাকা হিসাবের বিষয়ে ৮টি ব্যাংকের এমডিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মোট ৩০ একর জমি ও গুলশানের ফ্ল্যাট অ্যাটাচমেন্টের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

অর্থ ও মানবপাচারের মামলায় গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় পাপুলকে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে তিন মাসের মাথায় গত ২৮ জানুয়ারি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

নৈতিক স্থখলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের পদ বাতিল করা হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ওই আসন শূন্য ঘোষণা করে জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোলাম দস্তগীর পরিবারের ৩০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ
সিটি কলেজে অনিয়ম তদন্তে ‘বাধা দিতেই’ কিচ্ছা-কাহিনী নির্ভর সংবাদ সম্মেলন, নেওয়া হবে ব্যবস্থা
ফিরে দেখা ৯ জুলাই: দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা
ফেনীতে বন্যার অশঙ্কায় ১৩১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা