সেহেরি ছাড়াই রোজা রাখতে হচ্ছে হাজেরা-সাদেকদের

আহমাদ সোহান সিরাজী, সাভার (ঢাকা)
| আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৪১ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৯:১৫

আয়ের পথ নেই। নেই স্বামী বা ছেলে সন্তান। মেয়েটাও মারা গেছে কয়েক বছর আগে। শেষ বয়সে তাকে দেখার মতোও কেউ নেই। ছোট দুটি নাতনী নিয়ে অন্যের কাছে হাত পেতে জীবন চলে সাভারের হাজেরা খাতুনের। সাভার কাঁচাবাজার পদচারী সেতুতে ভিক্ষা করেন ষাটোর্ধ এই নারী। অন্য সময়ে চলমান কিছু মিললেও লকডাউনে নেই সেই সুযোগও। কিন্তু স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে রোজা রাখেন তিনি। তবে বেশিরভাগ দিনই না খেয়ে রোজা রাখতে হয় তাকে।

বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় পথচারী সেতুতে চলাচলকারীদের দিকে আকুতি নিয়ে তাকিয়ে আছেন হাজেরা। কিন্তু সাড়া মিলছেন তেমন।

ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকালে হাজেরা জানান, তার দুই নাতনীর একজন জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। নিজেও বয়সের কারণে আগের মতো চলাচল করতে পারেন না। তবুও পরিবারের সদস্যদের তিন বেলা আহার যোগাতে ভিক্ষার জন্য রাস্তায় নামতে হয় তাকে। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে লকডাউন শুরু হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। আগের মতো ভিক্ষাও জুটছেন না।

একই অবস্থা নিউ মার্কেটের সামনে ভিক্ষা করা পঙ্গু মানিক বিশ্বাসের। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২৭ টাকা পেয়েছে তিনি। মানিক জানান, মার্কেট বন্ধ থাকায় ক্রেতা নেই। ফলে ভিক্ষা পাননা তিনি। বলেন, ‘ছোট থেকেই এহানে ভিক্ষা করি রাস্তাতেই থাহি, আমার কেউ নাই। মার্কেট খুলা থাকলে চাইয়া খাইতে পারতাম। আগের লকডাউনে ম্যালা মানুষ আইতো খাওন লইয়া, এইবার কেউ আহেনা। সারাদিন না খাইয়া রইদে বইয়া আছি। কালকা ইফতারের ওয়াক্তে একজনে কিছু খাওন দিছিলো হেইডা খাইছি।’

সাভার বাসস্ট্যান্ডের সিটি সেন্টার, সাভার নিউ মার্কেট ও দুইটি ফুট ওভারব্রীজ এলাকার বিভিন্ন স্পটে প্রায় অর্ধশত ভিক্ষুক রাস্তায় বসে ভিক্ষা করেন। টানা লকডাউনে বন্ধ সাভারের বৃহৎ এই শপিংমল গুলো। নেই মানুষজনের আনাগোনা। কিন্তু অসহায় এই মানুষগুলো যারা অন্যের সাহায্যে নিজেদের অন্ন যোগায় তারা হাত পেতে বসে আছে আগের মতোই।

এদেরই একজন সাদেক মিয়া। বিমর্ষ মুখে বসে আছে সিটি সেন্টারে প্রবেশের সিড়িতে। কাছে যেতেই বললেন, ‘বহুত কষ্টে আছি বাবা। এবারের লকডাউনে কেউ কোনো সাহায্য করেনাই। খাওন-দাওন নিয়ে কত যে কষ্টে আছি আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তিনদিন ধইরা পরিবার লইয়া সেহেরী না খাইয়া রোজা রাখতাছি। ইফতারিতেও খাওনের কিছু নাই।’

সাদেক মিয়া যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক মোহাম্মদ আলী। তিনিও হতাশা নিয়ে বলেন, ‘লকডাউনের জইন্য বেবাক কিছু বন্ধ মানুষজনও বাইর হয় না। তাই আমরাও ভিক্ষা পাই না। গতবার লকডাউনে কত নেতারা খাওন বিলাইছে এইবার কেউ আহেনা আমগো দিকে কারো নজর নাই। ’

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

কেরানীগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জরিপ গ্রেপ্তার, যেভাবে তার উত্থান

চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম নিখোঁজ!

সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, দুর্দিন দেখছেন পটুয়াখালীর জেলেরা

রাণীনগরে কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার

দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই: সিমিন হোসেন

বিচারের আগে আটক ব্যক্তির ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বন্ধ করা হবে: আইজিপি

স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. আনিকা

বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযান, কেএনএফ সদস্যদের হতাহতের খবর

পাহাড়ে আমের বাম্পার ফলন, চাষির মুখে হাসি

গোপালগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষকসহ নিহত ৪

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :