পীরের রুটি পড়ায় ‘চোর সাব্যস্ত’, যুবককে নির্যাতন

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৫৯

পটুয়াখালীর বাউফল পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ডে মনিরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে অচেতন অবস্থায় ওই যুবককে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মনিরুল ওই ওয়ার্ডের মৃত কবীর হোসেনের ছেলে।

যুবকের স্ত্রী খালেদা বেগম অভিযোগ করেন, সম্প্রতি একই এলাকার আমির হোসেন খান নামে এক ব্যক্তির বসতঘর থেকে তিন লাখ ৬৬ হাজার টাকা চুরি হয়। চোর ধরার জন্য আমির হোসেন ফরিদপুরের এক কথিত পীরের কাছ থেকে একটি বিশেষ রুটি ও ডিম আনেন। সন্দেহবসত ওই রুটি তার স্বামী মনিরুল ইসলামকে বুধবার সকালে খেতে বললে তিনি রুটি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিষয়টি আমির হোসেন ওই পীরকে মুঠোফোনে অবহিত করলে অসুস্থ আমিরুলের গায়ে ১০১ কলস পানি ঢালতে বলেন।

কথিত পীরের নির্দেশে তার স্বামীকে বুধবার সকালে পুকুর পারে নিয়ে গায়ে ১০১ কলস পানি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তার স্বামী অসুস্থ হয়ে পরলে প্রথমে তাকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পড়ে তার অবস্থা গুরুতর দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবাবর পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘মনিরুল ইসলামকে খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। ওই অবস্থায় তার শরীরে একাধিকবার পানি দেওয়ায় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পরেন। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার স্বজনদের পরামর্শ দেওয়া হয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমির আলী খানের সাথে জমি নিয়ে মনিরুল ইসলামদের সঙ্গে দীর্ঘ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ জের ধরে মনিরকে শায়েস্তা করতে টাকা চুরির নাটক সাজিয়ে খাবারের সাথে পয়েজন মিলিয়ে তাকে মেরে ফেলার চেষ্ট করা হয়েছে।’ মনিরের পরিবারের স্ত্রী ও নাবলক দুইটি সন্তান ছাড়া আর কেউ নেই।

এ বিষয়ে আমির আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া না গেলে তার ছেলে মোশারেফ হোসেন খান বলেন, প্রায় চল্লিশজনকে রুটি খাইয়েছি। তার মধ্যে মনিরুল অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মানে মনিরুল চোর।

তাহলে আইনের সহায়তা না নিয়ে কেন আপনি একজনকে এভাবে নির্যাতন করলেন, এমন প্রাশ্নের জবাবে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরে আমি হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। ভিকটিমের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :