গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য

সাধারণ ছুটিতে ঢাকা ছাড়ার মাধ্যমে বিস্তার ঘটে করোনার!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২৪
অ- অ+
ফাইল ছবি

২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। করোনার বিস্তার রোধে এই সাধারণ ছুটির মধ্যেও অনেকেই ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন। এর মাধ্যমে সারাদেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। গবেষণাটি ৪ সেপ্টেম্বর নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই গবেষণার বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআরবি, আইদেশি, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম, যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্যাঙ্গার জিনোমিক ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বাথের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। ২০২০ সালের মার্চে এই যৌথ গবেষণাটি শুরু হয়।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রবেশ, এর বিস্তৃতি, বিস্তার প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে বিধিনিষেধ এবং জনসাধারণের গতিবিধির ভূমিকার ওপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণধর্মী গবেষণাটি করা হয়েছে।

গবেষণায় প্রাথমিকভাবে গত বছরের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত ৩৯১টি কোভিড-১৯ এর জিনোম বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, দেশে প্রথম করোনার উদ্ভব হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে। পরে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে আরও ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। বিস্তার প্রতিরোধে সরকার মার্চের ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সরকারের এটুআই প্রোপ্রাম থেকে সংগ্রহ করা ফেসবুক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে জনসাধারণের ঢাকা ছেড়ে যাওয়ায় প্রাপ্ত তথ্য সঙ্গে সার্স-কোভ-২ জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয়, দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের এটিই প্রাথমিক কারণ।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘আমাদের এই সমন্বিত উদ্যোগ বিভিন্ন সময়ে নীতিনির্ধারকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত এলাকাতে জনগণের চলাচল নিষিদ্ধ করা, পরিবহন এবং যানবাহন চলাচলে সীমাবদ্ধতা আনা, বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন। যেসব দেশে উদ্বেগজনক ভেরিয়েন্ট ছিল, সেখান থেকে আসা ভ্রমণকারীদের সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা রাখা, সময়মতো লকডাউন সিদ্ধান্ত বা প্রয়োজনবোধে আন্তর্জাতিক চলাচল সীমাবদ্ধ করার পরামর্শও দেওয়া হয়। আমাদের এই কনসোর্টিয়াম গত বছরের মার্চ থেকে একত্রে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের এই কাজ চলমান থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারকদের জন্য কোভিড-১৯–এর বিস্তার ঠেকাতে প্রয়োজনীয় প্রমাণভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করতে পারব।’

গবেষণাপত্রটির মূল লেখকদের একজন লরেন কাউলি। তিনি বলেন, গবেষণাটিতে মহামারি প্রতিরোধে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য মহামারির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ক্যারোলিন বাকি বলেন, এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে, এ ধরনের একটি মিলিত বিশ্লেষণধর্মী গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি একটি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা মূল্যবান ভূমিকা রাখতে পারে। অন্য কোনো উপায়ে এটা অর্জন করা কঠিন।

আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং এই গবেষণা নেতৃত্ব দানকারীদের একজন ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন দেশে কয়েক মাস পর মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন ধরন তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ধরন টিকার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে দেশের সব মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার। এই টিকাগুলোর কার্যকারিতা বোঝার জন্য আমাদেরকে এ ধরনের কাজ অব্যাহত রেখে সরকারকে সময়মতো সঠিক তথ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/কারই/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা