২০৫০ সালে দেশে ডিমেনশিয়া রোগী সংখ্যা হবে ২২ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৪৭
অ- অ+

বিশ্বে প্রতিদিনই বাড়ছে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন ও ভুলে যাওয়াসহ মানসিক নানা অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়ের রোগ-ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। বাংলাদেশেও রয়েছেন কয়েক লাখ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগী, যা ২০৫০ সালে ২২ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে অনুমান করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা সেপ্টেম্বর-২০২১ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি মানুষ নতুনভাবে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে বিশ্বে সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ ডিমেনশিয়া নিয়ে বাস করছেন, যা ২০৫০ সালে প্রায় ১৪ কোটিতে পৌঁছাবে।

মঙ্গলবার বিশ্ব আলঝেইমারস্ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ডিমেনশিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি জেনারেল মো. আজিজুল হক।

তিনি বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার। ২০৫০ সালে সেটি দাঁড়াবে প্রায় ২২ লাখে পৌঁছাতে পারে।

ডিমেনশিয়া রোগ প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার বিভাগের সহায়তায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ ও জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোমস লিমিটেড।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় সভায় জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোমস লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সরদার এ নাঈম বলেন, ডিমেনশিয়া সম্পর্কে সচেতন করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ডিমেনশিয়া মোকাবেলায় আমাদের করণীয় কি? কী ধরনের সচেতনতা দরকার তার জন্যই আমাদের এ আয়োজন। বৃদ্ধ মানুষকে ভালো সেবা দিতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মূল প্রবন্ধে আজিজুল হক বলেন, ডিমেনশিয়া সমাজের সব গ্রুপকেই সমানে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত ব্যক্তির স্মরণশক্তি, উপলব্ধি, প্রকাশ ক্ষমতা এবং যুক্তি-বুদ্ধি ক্রমেই হ্রাস পায়। এটি কত দ্রুতহারে বাড়বে তা অনেকটাই ব্যক্তিনির্ভর। বর্তমানে ডিমেনশিয়া পুরোপুরি ভালো করার কোনো কার্যকর ওষুধ নেই।

স্মৃতিশক্তি হ্রাস, পরিকল্পনা বা সমস্যা সমাধানে অপারগতা, গুছিয়ে কথা বলতে বা লিখতে সমস্যা, সঠিক জায়গায় জিনিসপত্র না রাখাসহ ডিমেনশিয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ প্রবন্ধে তুলে ধরেন মো. আজিজুল হক।

এসময় সচেতনতার অভাব, দ্রুত শনাক্ত না হওয়া, বিশেষায়িত হাসপাতাল না থাকা, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও দক্ষ নার্সের অভাবসহ ডিমেনশিয়া চিকিৎসা নিয়ে ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরেন তিনি। এছাড়া এ রোগ মোকাবেলায় সফল হওয়ার জন্য বিশ্ব আলঝেইমারস্ দিবস সরকারিভাবে পালন, ডিমেনশিয়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ ৮টি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ জানান তিনি।

গোলটেবিল আলোচনায় আইসিডিডিআরবির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. বদরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে ডিমেনশিয়া কোন ধরনের তা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া যখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে তখন তারা ফিরে আসার অবস্থায় থাকেন না। তাই যখনই দেখবেন কেউ বেশ রেগে যাচ্ছেন সাধারণ অবস্থাতে, এর মানে তিনি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।

অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, নিউরোসায়েন্সের সঙ্গে ডিমেনশিয়াও সংযুক্ত। নিউরোসায়েন্স নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা আছে, কাজ হচ্ছে। কিন্তু ডিমেনশিয়াকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ খুবই জরুরি। ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। এছাড়া এই রোগের জন্য আলাদাভাবে সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল করার দাবি জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার বিভাগের চেয়ারপারসন সহকারী অধ্যাপক তাওহিদা জাহান বলেন, মনে না পড়া বিষয়টিকে আমি রোগ বলতে নারাজ। এটা হতেই পারে। কিন্তু সেটির জন্য রোগের সৃষ্টি যেন না হয়, তাই সচেতনতা জরুরি।

ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/আরএ/ইএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দাম্পত্য কলহের জেরে যমজ ২ শিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেন মা
ইউআইইউ এলাকায় র‍্যাবের অভিযান, বিদেশি পিস্তলসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী মোজাম্মেল গ্রেপ্তার
ভোটের মার্কা থাকছে না শাপলা, ইসির নীতিগত সিদ্ধান্ত
ফের এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে ককটেল বিস্ফোরণ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা