ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছায় তানিয়া এখন সফল, অন্যের আদর্শ

ওমর ফারুক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ মার্চ ২০২২, ০৯:০৫| আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১৮:২০
অ- অ+

ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে বেড়ে উঠেছেন তানিয়া ওয়াহাব। তেমন ইচ্ছে থেকে ছাত্রজীবনেই অল্পবিস্তর ব্যবসা শুরু তার। ঢাকার ইসলামপুর থেকে কাপড় কিনে ডরমিটরির শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করা বা ক্যাফেটেরিয়াতে ঘরে বানানো খাবার সরবরাহ। পরবর্তীকালে এই অল্পবিস্তর ব্যবসা তানিয়াকে করে তোলে বড় পরিসরের উদ্যোক্তা।

উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে তানিয়ার পড়াশুনা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজিতে। সেখানে পড়ার সুবাদেই মাথায় আসে চামড়াজাত পন্য নিয়ে কাজ করার। ওই ধারাবাহিকতায় উৎপাদন আর বিপননের কাজটা শুরু করেন স্নাতক শেষ বর্ষে এসে।

৮ মার্চ ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এদিন ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপচারিতায় সফল এই নারী উদ্যোক্তা শুনিয়েছেন তার এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

ঢাকা টাইমসকে তানিয়া বলেন, ‘১৬ বছর আগে আমি যখন চামড়াজাত শিল্প নিয়ে কাজ শুরু করি, তখন এখানে কোনো নারী উদ্যোক্তাই নেই। অনেক বাধা আর সমালোচনার শিকার হয়েছি। কিন্তু দমিনি।’ কথায় কথায় জানালেন, ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা তার সেই ব্যবসা থেকে এখন বাৎসরিক আয় ১ কোটি টাকা। অভাবনীয় সাফল্যের জন্য পেয়েছেন বেশকিছু পুরষ্কার ও সম্মাননা।

পুরষ্কারের ঝুলিটাও ছোট নয় তানিয়ার। তিনি এরইমধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে সেরা উদ্যোক্তা পুরষ্কার, বাংলাদেশ শিল্প ও বনিক সমিতি ফেডারেশন থেকে সেরা এসএমই নারী উদ্যোক্তা পুরষ্কার, ডেইলি স্টারের দেওয়া আউটস্টান্ডিং উইমেন এন্ড বিজনেস এওয়ার্ড অর্জন করেছেন।

বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের নতুন উদ্যোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ব্রান্ডগুলোর মধ্যে যেমন এপেক্স, বাটা তাদেরকে এখন প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিচ্ছি। পাশাপাশি নিজের ব্রান্ড নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি। কাজ বেড়েছে তাই প্রোডাকশন হাউজ বড় স্পেস নিয়ে নতুন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি।’

‘নিজের ব্রান্ড ট্যানকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করাতে চাই। পাশাপাশি অনলাইনে ট্যানকে নিয়ে কাজ করতে চাই। দেশের বাইরে আমাদের গার্মেন্টস খাতের যে সুনাম, আমি চাই চামড়াশিল্পেরও সেই প্রসারটা ঘটুক। বাংলাদেশেও যে ভালোমানের ব্যাগ তৈরি হয়, এটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই’—যোগ করেন এই নারী উদ্যোক্তা।

দেশের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সার্বিক ব্যবস্থাপনাকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ‘সার্বিক ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তবে বেশকিছু সমস্যাও রয়ে গেছে। ক্ষুদ্র বা মাঝারী উদ্যোক্তাদের পথচলা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে সামাজিক বাধা তো আছেই, অর্থনৈতিক সমস্যাও বড় বিষয়। সবমিলিয়ে ফার্স্ট জেনারেশনের একজন নারী উদ্যোক্তার মার্কেটিং, নেটওয়ার্কিং, ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি নিয়ে পথচলাটা ডিফিকাল্ট।’

উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কি কি ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিৎ পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রথমত দরকার আত্মবিশ্বাসের। একজন মানুষ চাকরিতে ঢুকলে পরের মাসে বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা পায়, কিন্তু ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন। এখানে সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। আয় করতেই দুই তিন বছর লেগে যেতে পারে। সুতরাং এই ক্ষেত্রে মানসিকভাবে ধৈর্য নিয়ে লেগে থাকতে হবে।’

বর্তমানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পোশাক খাত সবচেয়ে সহজ খাত বলে মনে করেন চামড়াজাত শিল্পে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে নেওয়া এই নারী উদ্যোক্তা। বলেন, ‘যদিও পোশাক খাতে এখন অনেক প্রতিযোগী। ফলে এখানেও অনেক চ্যালেঞ্জ। এছাড়া খাবারের ব্যবসাও এখন বেশ সহজ উদ্যোগ হতে পারে। তবে যাই করেন না কেন সেই খাতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত এবং অভিজ্ঞ করে তুলতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৯মার্চ/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
‘জুলাই বললে লাল হয়ে যায় স্মৃতি’: প্রেস সচিব শফিকুল আলম শেয়ার করলেন নিউটনের কবিতা দিয়ে
শহীদের রক্ত, বিপ্লব সমুন্নত হোক: আসিফ মাহমুদ
 ‘জুলাই স্মৃতিতে এক হই আমরা’: বিএনপির কর্মসূচির প্রশংসায় ফারুকী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা