পেশায় ভিন্ন হলেও মাদক কারবারে তারা এক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২২, ২১:০৮
অ- অ+

রাজধানীতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তির পেশা ভিন্ন হলেও মিল আছে মাদক কারবারে। তাদের একজন বিদেশ যাওয়া যাত্রীদের ম্যানপাওয়ারের কাজ করেন। এর আড়ালে হাত বদল করে আফিম। আর অন্যজন একটি বেসরকারি গ্রুপ অব কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। চাকরির আড়ালে তিনি মাদক কারবার করে আসছেন বলে জানিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর বনশ্রী ও পল্টন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তিন কেজি আফিমসহ এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএমসি) ঢাকা মহানগর কার্যালয় (উত্তর)।

শনিবার দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে (উত্তর) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল এসব তথ্য জানান। এ সময় অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান ও শাহীনুল কবীর উপস্থিত ছিলেন।

ওষুধের কাঁচামালের আড়ালে একটি চক্র মাদকের চালান ঢাকায় নিয়ে আসে। ক্রেতার ছদ্মবেশ ধারণ করেন ইন্সপেক্টর শাহীনুল কবীর। পরে তিন কেজি আফিমের চালান জব্দ করা হয়। গত ১০-১২ বছরের মধ্যে এটিই বড় চালান বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী আবুল মোতালেব ও বেসরকারি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্লাস্টিকের বয়ামের মধ্যে পলিথিনে মোড়ানো তিন কেজি আফিম উদ্ধার করা হয়। আফিম একটি 'ক' শ্রেণির মাদকদ্রব্য। উদ্ধার আফিমের আনুমানিক বাজারমূল্য পৌনে তিন কোটি টাকা।

অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, ঢাকা মহানগরীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। কিছুদিন আগে একটি গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যায় যে, একটি চক্র আফিমের বড় চালান ঢাকায় এনে বাজারজাত করার চেষ্টা করছে। এরপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। পরে শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আটক হওয়া মাদক আফিম কি না, তা জানতে রাসায়নিক পরীক্ষা করে ডিএনসি। পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, ওষুধের কাঁচামাল নয়, জব্দ করা চালানটি মূলত আফিমের, যা আফগানিস্তান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে বলে ধারণা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।

জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, বনশ্রী আবাসিক এলাকা থেকে প্রথমে আবুল মোতালেবকে গ্রেপ্তার করার পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাহাঙ্গীর সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা পরস্পরের যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক ঢাকা এনে ব্যবসা করে আসছিলেন।

আফিমের চালান কীভাবে আসছে- জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, পাশের দেশ ভারত থেকে এই চালান বাংলাদেশে এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাদকের হাব হচ্ছে আফগানিস্তান। আফগানিস্তান থেকেই এই আফিমের সরবরাহ। আফিমের চালান ঢাকায় আনা হয় ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে। উদ্ধারকৃত আফিমের চালানটি ফেনী থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। গ্রেপ্তাররা আফিম নতুন করে ঢাকায় সরবরাহের চেষ্টা করে আসছিল।

এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই নেটওয়ার্কের সব সদস্যকেই তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দেশে আফিমের ব্যবহার দুই রকম হয়ে থাকে। প্রথমত আফিম সরাসরি সেবন করা হয়। দ্বিতীয়ত আফিম দিয়ে কেমিকেলের সাহায্যে হেরোইন, ইয়াবা ও ফেনসিডিলের মতো মাদক তৈরি করা হয়। আফগানিস্তান ছাড়াও পাকিস্তান ও ইরানে এর চাষাবাদ হয়ে থাকে।

আফিম সেবনের ক্ষতির দিক উল্লেখ করে এই কর্মকতা বলেন, আফিম সেবনকারীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং অবচেতন হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া মুখ ও নাক শুকিয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আর বেশি পরিমাণে সেবনে মৃত্যুও হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/এএইচ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
১৮ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস
‘জুলাই বললে লাল হয়ে যায় স্মৃতি’: প্রেস সচিব শফিকুল আলম শেয়ার করলেন নিউটনের কবিতা দিয়ে
শহীদের রক্ত, বিপ্লব সমুন্নত হোক: আসিফ মাহমুদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা