পণ্য ফেরিতে বাসায় যাতায়াতে স্বর্ণ চুরি, সেই চারজন কারাগারে

রাজধানীর কলাবাগানে একটি আবাসিক ভবনের দোতলার ফ্ল্যাটের গ্রিল কেটে ৭২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লাখ টাকা চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তারা হচ্ছেন- সোহেল, ফরহাদ, ইলিয়াস ও আনোয়ারুল। দুদিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ শুক্রবার তাদের ঢাকা মহানগর আদালতে হাজির করে আবার রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আদালত তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদকারীদের একটি সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের পাঁচ শতাধিক সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্য। প্রথমে তারা সবজি বিক্রেতা সেজে আবাসিক ভবনটির ওই ফ্ল্যাটে রেকি করে। একই পরিচয়ে ওই ফ্ল্যাটেও সবজি বিক্রি করতে গিয়েছিল। বেশকিছুদিন যাতায়াতের মধ্য দিয়েই তারা তাদের মিশন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যায়। পরে সুযোগ বুঝে গ্রিল কেটে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে।
পুলিশ জানায়, চক্রটি ভ্যানে করে ডাব, সবজি বা ফল বিক্রেতা সেজে ফাঁকা বাসা টার্গেট করে। পরে সময় সুযোগ বুঝে গ্রিল কেটে চুরি করে। আর চুরি করার সময় কোনো ধরনের বাধা আসলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মূল্যবান মালামাল কেড়ে নেয়।
এদিকে দুইদিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করে আরও সাতদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। অন্যদিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশ জানায়, একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরির ঘটনায় ওই চারজনকে গ্রেপ্তারের পর গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ তাদের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০ আগস্ট কলাবাগান লেক সার্কাস ডলফিন গলিতে অ্যাডভোকেট আরেফিনের বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা বাসায় ঢুকে ভুক্তভোগীর মায়ের ৭২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লাখ টাকা চুরি করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলাবাগান থানায় মামলা করেন।
এরপর ওই ভবনসহ আশপাশের একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে চোরচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ। টানা কয়েকদিন অভিযান চালিয়ে চুরির ঘটনায় জড়িত চারজনকে একাধিক স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে চোরাই তিন ভরি সোনার গয়না, নগদ ৮৫ হাজার টাকা, তিনটি বিদেশি পিস্তল ও ১১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সবজি বিক্রেতা সেজে বাসায় বাসায় রেকি করে পরে সুযোগ বুঝে চুরি করে চক্রটি। রাজধানীর কলাবাগান ও আদাবর থেকে এই চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে চরির এই কৌশল সম্পর্কে পুলিশ জানতে পারে।
তাদের গ্রেপ্তারের পর গত মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ভুক্তভোগী কলাবাগান থানায় মামলা করলে নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামানের নেতৃত্বে কলাবাগান থানার একটি দল গ্রেপ্তার অভিযানে নামে। তারা কলাবাগান থানা ও রাজধানীর আশপাশের ৫০০ এর বেশি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে কলাবাগান থানার ডলফিন গলি থেকে সোহেল, ফরহাদ ও ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলামকে আদাবর থানার নবোদয় হাউজিং বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপির কলাবাগান থানায় দুইটি মামলা হয়েছে বলেও জানান ডিসি শহিদুল্লাহ।
(ঢাকাটাইমস/১৬ সেপ্টেম্বর/আরআর/কেএম)
সংবাদটি শেয়ার করুন
অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

পুলিশ সার্জেন্টকে মারধরের অভিযোগে কারাগারে জনতা ব্যাংকের ডিএমডির স্ত্রী-মেয়ে

উত্তরায় ছিনতাইকারী ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল যুবকের

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৫০

আরসার গান কমান্ডার মুছা গ্রেপ্তার, বিপুল বিস্ফোরক-গোলাবারুদ উদ্ধার

মোহাম্মদপুরের সন্ত্রাসী ‘রক্তচোষা জনি’ গ্রেপ্তার, বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার

উত্তরায় মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান, ৪০টি দেশের মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার ৫

‘তেজগাঁওয়ে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনার ফুটেজ প্রচার হওয়ায় অপরাধীরা আত্মগোপনে’

র্যাব পরিচয়ে তিন মাসে ৩০ ডাকাতি-ছিনতাই, ১০ কোটি টাকা লুট

চুরি করতে দোকানে ঢুকে গণপিটুনির ভয়ে ৯৯৯-এ ফোন! উদ্ধারের পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার
