ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই উপজেলার মানুষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:০৫

ওপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সর্ববৃহৎ প্রাচীন বাজার চাতলপাড়, এপারে একই জেলার সরাইল উপজেলার সর্ববৃহৎ বাজার অরুয়াইল মাঝখানে কান্তার খাল নামে একটি খাল দুই উপজেলাকে বিছিন্ন করে রেখেছে। প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষকে এই খাল পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়। খালটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও সুফল পাননি। তাই যুগের পর যুগ ধরে বাধ্য হয়েই খেয়া নৌকায় করে মানুষদের খালটি পারাপার হতে হচ্ছে।

সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, একটি সেতুর জন্য দুইটি উপজেলার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কয়েক বছর আগে এই খালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুর দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসনি ওই এলাকায় মানুষের। আস্তে আস্তে সেতুটি ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে।

নাসিনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সরাইল ও নাসিনগর উপজেলা পাশাপাশি হওয়ায় সরাইল উপজেলার মানুষ নাসিনগরে ও নাসিরনগর উপজেলার মানুষ সরাইল উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে। এছাড়া এই দুই উপজেলা পাশাপাশি হওয়ার আত্মীয়-স্বজনও বেশী। কিন্ত খালটিতে সেতু না থাকায় দুই উপজেলার লক্ষাধিক হাজার মানুষ সেতুর অভাবে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

জানা যায়, নাসিনগর উপজেলা চাতলপাড় ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ খালটি পাড় হয়ে সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারে এবং সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল ও চুন্টা ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের মানুষ খালটি পাড় হয়ে চাতলপাড় বাজারে যাচ্ছে। এর মধ্যে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীও রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, চাতলপাড় বাজারের আশপাশের অর্ধ শতাধিক গ্রাম নাসিনগর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত হলেও, এসব গ্রাম তাদের উপজেলা সদর থেকে অন্তত ২০কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই এসব গ্রামের মানুষ খালের ঠিক ওপারে অবস্থিত সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারেই বাজার থেকে শুরু করে শিক্ষা-চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। এসব মানুষের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে অরুয়াইল বাজারে। এ দুই উপজেলার মানুষকে প্রতিদিনই ব্যবসা-চিকিৎসা-শিক্ষাসহ নানা কাজে ও আত্মীয়তার সূত্রে অরুয়াইল বাজারে আসতে হয়। একটি সেতুর অভাবে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নাসিনগর উপজেলার চাতলপাড় গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, ভাটি এলাকার দুই উপজেলাবাসী চরম দুর্ভোগে আছি। দুপাশে রাস্তা আছে ব্রিজ নাই। কান্তার খালে এসে আটকে যায়। নৌকা দিয়ে পাড় হতে হয়।

সরাইল উপজেলার ধামাউড়া গ্রামের গৃহিণী খোদেজা বেগম জানান, আবহাওয়া খারাপ হলে কান্তার খালে নৌকা থাকে না। খাল দিয়ে অন্য নৌকা গেলে তখন ডেকে এনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে খালটি পার হতে হয়।

ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক সুজন মিয়া, কান্তার খালে ব্রিজ না থাকায় আমরা ধামাউড়া পূর্বপাড়া পর্যন্ত মোটরসাইকেল যাত্রীদের নিয়ে যায়। পরে যাত্রীরা নৌকাযোগে খাল পার হয়ে ওই পাড়ে গিয়ে আবার মোটরসাইকেল উঠে নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় বাজার ও বিভিন্ন গ্রামে যায়।

সরাইল উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি সরাইলে যোগদান করেছি কয়কদিন হলো। দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে তখন কান্তার খালেও ব্রিজ হবে ইনশাআল্লাহ। কয়েকদিনের মধ্যেই পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

(ঢাকাটাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :