একমাত্র মেয়ের শরীরে ক্যানসার, চিকিৎসার টাকা না থাকায় কাঁদছেন মা-বাবা

ছোট্ট শিশু জান্নাত। দুই বছর বয়স তার। গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে শিখেছে মাত্র। এক-আধটু কথাও বলতে পারে, আব্বু-আম্মু বলে। ঢাকার ধামরাই পৌর শহরের পাঠানটোলা মহল্লার বাসিন্দা হাবিব খান ও তাহমিনা আক্তার দম্পতির মেয়ে সে।
হাবিব-তাহমিনার এক দশকের সংসার জীবনে প্রাপ্তি কেবল এই 'জান্নাত'।
বছর চারেক আগে এক ছেলে সন্তান জন্ম দেন তারা। সেই শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার আগেই পাড়ি জমিয়েছে পরপারে। তার বছর খানেক পর তাদের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে 'জান্নাত'। এতে হাবিব-তাহমিনা দম্পতি যেন সত্যিই জান্নাত খুঁজে পেল, আর সেই খুশিতে প্রথম সন্তান হারানোর ব্যথা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তারা।
জান্নাতকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছিল এই দম্পতির সকল হাসি-আনন্দ। কিন্তু হঠাৎই যেন তাদের জীবনে নেমে এল অন্ধকার। তাদের একমাত্র সন্তানটি এখন ঢাকার শিশু হাসপাতালের নিচতলায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মুখে হাসি নেই তার। জীবনকে উপভোগ করার আগেই তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যানসার।
এই খবরে পুরো পরিবারটিই এখন অথৈ সাগরে ভাসমান। তাদের চোখের সামনে অন্ধকার।
জান্নাতের বাবা হাবিব খান অঝোরে কেঁদে উঠেন—'এ জীবনে আর কিছু চাই না, এ জীবনে আমার এই জান্নাতকে সুস্থ করে দাও আল্লাহ'। কথাগুলো বলতে গিয়ে তিনি আরও বেশি কাঁদলেন।
হাবিব স্থানীয় বাটা কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। মেয়ের চিকিৎসার জন্য দৌড়াতে গিয়ে চাকরি খুঁইয়েছেন তিনি। এখন এই বেকার বাবা আহাজারি—‘আমার জান্নাতটাও কি আমাদেরকে ছেড়ে যাবে ভাই?’
এ প্রশ্নের উত্তর কঠিন। সত্যিই কঠিন।
শিশুটির বাবা হাবিব খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, হঠাৎ ভীষণ জ্বর হয় জান্নাতের। চিকিৎসা দেওয়া হলেও জ্বর ভালো হয় না। পরে নানা পরীক্ষার পর ধরা পরে জান্নাতের ছোট্ট শরীরেতে বাসা বেধেছে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যানসার।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন অফিস কামাই দেওয়ায় চাকরি হারাই। এখন বেকার জীবন পার করছি। এতদিন চিকিৎসা করাতে গিয়েই ধার-দেনাসহ সম্ভাব্য সব টাকার উৎস শেষ হয়ে গেছে।
জান্নাতের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ। কিন্তু বেকার বাবার পক্ষে এই টাকা জোগার করা কষ্টসাধ্য। জান্নাতের পরিবার তার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত পাতছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে।
ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এসএম হাসান (শুভ্র) ঢাকা টাইমসকে, আমাদের সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক জটিল দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত রোগীদের আর্থিকভাবে কিছু সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। তাই ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি তার সন্তানের চিকিৎসা ব্যয়ের সাহায্যের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেন, তাহলে তাকে এই আর্থিক সহযোগিতাটি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন তাকে কেমোথেরাপি দেওয়ার। চিকিৎসকরা বলেছেন, জান্নাত ক্যানসারের প্রথম স্টেজে আছে।
জান্নাতের বাবা বলেন, চিকিৎসা করাতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখন কিভাবে কি করবো সেটাই বুঝতেছি না! কিন্তু আমার মেয়েটাকে যেকোন মূল্যে বাঁচাতে চাই। পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চাই। এই এক জান্নাত ছাড়া তো ভাই আমাদের আর কিচ্ছু নাই। তাই আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
জান্নাতের বাবার বিকাশ ও নগদ পারসনাল নাম্বার: ০১৯৯০৫০১১৯৮। এই নম্বরে শিশুটির জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানো যাবে। অথবা সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০১০০২২৬০৮২৯৩৪, ধামরাই শাখা, জনতা ব্যাংক। এই নম্বরেও টাকা পাঠানো যাবে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/এআর)
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার

তাড়াশে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

পাবনায় অনুমোদনহীন স্যালাইন তৈরির দায়ে হোসেন ফুডকে জরিমানা

সিরাজগঞ্জে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে ২ নিহত

চুয়াডাঙ্গায় নাশকতা মামলায় বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী কারাগারে

চাঁদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ১৫ সদস্য আটক

বগুড়ায় ডোবায় পড়ে শিশুর মৃত্যু

ময়মনসিংহে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

জন্মলগ্ন থেকেই আ.লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করছে: আমিনুল ইসলাম
