মহেশপুরে ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবসে ৭কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা কৃষকের

আলমগীর হোসেন, মহেশপুর (ঝিনাইদহ)
  প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৫৩
অ- অ+

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফুলচাষিরা ভালোবাসা ও মাতৃভাষা দিবসে ৭ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ উপজেলা বর্তমানে শস্যভান্ডার খ্যাত ফুলের ভান্ডারে পরিণত হয়েছে।

এলাকাবাসী ও মহেশপুর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর এ উপজেলায় ১০৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে। এরমধ্যে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, কালার স্টিক ও গাঁদা ফুল উল্লেখযোগ্য। এক সময় শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল মহেশপুর। ধান ও গম ছাড়া তেমন কোনো ফসল উৎপাদন হতো না। তখন উৎপাদনের ৭০ ভাগ শস্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হতো। বর্তমানে কলা, বিভিন্ন জাতের সবজি, পেয়ারা, পেঁয়াজ-রসুন, কমলা, মাল্টা লেবু ও কুল চাষ হচ্ছে।

এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য হারে ফুলচাষ শুরু হয়েছে। এ উপজেলায় মোট জমির পরিমাণ ৪৯২১০ দশমিক ২০ হেক্টর, মোট ফসলি জমি রয়েছে ৪০৪৮০ হেক্টর। এরমধ্যে ফুল চাষ হয়েছে ১০৪ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল একশ হেক্টরের নিচে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, ফুলের চাহিদা ও দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। বর্তমানে জারবেরা ফুল ২৫-৩০ টাকা, গ্লাডিওলাস ১৫-২০ টাকা, গোলাপ ১৫-২০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৫-৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, একবিঘা জমিতে ৫০ হাজার থেকে একলাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। বর্তমানে মহেশপুরের ফুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হয়ে থাকে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল কেনার জন্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে মহেশপুর চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন পাইকারি ক্রেতারা। গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩ কোটি টাকার ফুল রপ্তানি করা হয়। এছাড়া উপজেলার নেপার মোড়সহ বিভিন্ন বাজারে ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে জারবেরা, গোলাপ ও রজনীগন্ধার চাহিদা বেশি। গাঁদা ফুলের ঝোঁকা বা মালা তৈরি করে তা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে।

উপজেলার বড় ফুলচাষি শ্যামকুড় গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে করিম মেম্বর জানান, তিনি ৩ বিঘা জারবেরা, ১বিঘা গ্লাডিওলাস, ২বিঘা চন্দ্রমল্লিকা, ও ২বিঘা রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন। ৮বিঘা জমির ফুল চাষে তার ১২ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। এতে তার খরচ বাদে ৭লাখ টাকার মত লাভ হয়েছে বলে তিনি জানান।

একই গ্রামের মতলেব গাজীর ছেলে নিজাম গাজী জানান, তিনি ১বিঘা কালার স্টিক, ১বিঘা গোলাপ, ২বিঘা জারবেরা ও ১ বিঘা রজনীগন্ধা ফুল চাষ করেছেন। এই চাষে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে জানান। যশোরের গদখালীর ফুল চাষি নুর মোহাম্মদ মহেশপুর উপজেলায় ফুল চাষ করছেন এবং উপজেলার ফুল চাষিদের নানাভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

ভবনগর গ্রামের ফুল চাষি হামজা, রাজু মিয়াসহ অনেক ফুল চাষি জানান, করোনাকালীন সময়ে তারা ফুল চাষে তেমন লাভের মুখ দেখতে পারেননি। এ বছর তারা ভালো দাম পাওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন।

ঝিনাইদহ জেলার অর্ধেকের বেশি পরিমাণ ফুল চাষ হয়েছে এ উপজেলায়। এবার দাম বেশি পেলে আগামী বছর আরো ফুলচাষ বাড়বে বলে মহেশপুর কৃষি অফিস জানিয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে প্রায় সব জায়গায়তে ফুল চাষ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভয়াবহ ধস নেমেছে ভারতের পর্যটন শিল্পে
সখীপুরে ইয়াবাসহ নারী কারবারি গ্রেপ্তার
এক ঝাঁক অভিনেত্রীর সঙ্গে মোশাররফ করিমের ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’
আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা ঘরে ফিরেছেন, ‘ভারতের উপর বিশ্বাস নেই', তাই বাঙ্কার রেখেছেন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা