হরিণাকুণ্ডুতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে নুরজাহান (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার পারফলসী গ্রাম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নুরজাহান উপজেলার চটকাবাড়িয়া গ্রামের সোহরাব হোসেনের মেয়ে এবং একই উপজেলার পারফলসী গ্রামের আল আমিন হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন তার স্বামী এবং তিনি একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতে আলামিনের আত্মচিৎকারে আশেপাশের সবার ঘুম ভেঙে যায়। তখন সবাই জানতে পারে তার স্ত্রী গলাই রশি দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে। পরে তাকে ঘরের আড়া থেকে নামিয়ে হাটানোর চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
আলামিন বলেন, আমি কৃষি কাজ করি। স্ত্রী, সন্তান ও বাবা মাসহ একই বাড়িতে থাকি। রাতে বাচ্চাসহ সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ রাত আনুমানিক ১২টার দিকে মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে গেলে স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে পরিবারের লোকের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
আলামিনের দাবি, তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিলনা। কী কারণে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
এবিষয়ে নুরজাহানের মা বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপরে শারীরিক নির্যাতন করতো আমার জামাই ও তার পরিবারের লোকেরা। বিভিন্ন সময়ে তারা যৌতুকের দাবি করতো। আমরা এ নিয়ে বেশ কয়েক বার পারিবারিক ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছি। নুরজাহানকে তার স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয় হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার সাবেক মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু বলেন, আমার বাড়ির পাশেই নুরজাহানের বাবার বাড়ি, তাকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি। অনেক শান্ত স্বভাবের মেয়ে। তাকে শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতন করতো বলেও আমার কাছে কয়েকবার জানিয়েছে তার বাবা। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি।
হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের তদন্ত চলছে। যেহেতু একই কক্ষের ভেতরে ঘটনা ঘটেছে, তাই সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন