পঞ্চগড়ে গুজব ছড়িয়ে আবারও দোকান ভাঙচুর, যুবদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ১৮

পঞ্চগড়ে গুজবে অসহায় প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দুজনকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে সামাজিকমাধ্যম ও মোবাইল ফোনে দুষ্কৃতিকারীদের এমন গুজবে শনিবার রাতে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে জেলা শহরে। গুজবে কান দিয়ে কিছু যুবক আবারও লাঠিশোটা নিয়ে সড়কে নামেন। এ সময় শহরে অবস্থানকারী পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদেরও দৌড়াতে দেখা যায়। তাদের ধাওয়ায় পথচারীসহ মানুষজন দিক-বিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষে গুজবে কান না দিয়ে শহরের বিভিন্ন মসজিদের মাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে প্রশাসন, অতিরিক্ত পুলিশ ও আওয়ামী নেতারদের তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে রবিবার সকাল থেকেও জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ পুলিশ ও বিজিবির টহল দেখা গেছে। আহমদ নগরেও অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। শহরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দোকানপাটও স্বাভাবিক খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে আহমদিয়া সম্প্রদায়সহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গুজবের ঘটনায় সুযোগ সন্ধানীরা বাজারের ওয়াকার জুতার শোরুমসহ তিনটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। ধাক্কারা এলাকার ট্রাক টার্মিনালে একটি গাড়ি পুড়ে দেয় বিক্ষব্ধরা। কয়েকশ যুবক রাজনগর ও তুলারডাংগা হয়ে করতোয়া নদী পার হয়ে আহমদ নগরে যাওয়া চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ ও বিজিবি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আবারও রাবার বুলেট, গ্যাস বুলেট ছুড়ে পুলিশ।
গভীর রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটের নেতৃত্বে শহরে শান্তি মিছিল বের করা হয়।
এদিকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাতেই পুলিশ পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফজলে রাব্বীকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের অভিযোগ, গ্রেপ্তার যুবদল নেতা ফজলে রাব্বি আরও একজনকে মোটরসাইকেলে নিয়ে পঞ্চগড় শহরের বিভিন্নস্থানে গুজব ছড়ায় যে কাদিয়ানিরা জবাই করে দুজনকে হত্যা করেছে। যা ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। রাতে গুজবের ঘটনায় ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, আমরা বারবার বলছি, বিএনপি-জামায়াত চক্র এই ঘটনার ইন্ধনদাতা। তারা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই সুযোগে চক্রটি শহরে লুটপাটেরও চেষ্টা করে। রাতেই আমরা এক যুবদল নেতাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, কোথাও কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। একটি ফেসবুক আইডি এবং পেজ থেকে ভয়াবহ গুজব ছাড়ানো হয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সাথে বৈঠক করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫মার্চ/এলএ)

মন্তব্য করুন