জীবনদর্শন: দ্বান্দ্বিক জীবন

জি এন হক
 | প্রকাশিত : ০৪ মে ২০২৩, ১৩:০৭

বড় বিচিত্র মানুষের জীবন। শৈশবে জ্ঞানের আলো প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে বহুমাত্রিক দ্বান্দ্বিকতার সম্মুখীন হতে হয় মানব জীবনকে। এর অবশ্য নানা প্রকার কারণ ও ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা যেতে পারে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি ভেদে। দার্শনিকদের ধারণা, বস্তুতপক্ষে প্রকৃতিগতভাবে এবং অনেক ক্ষেত্রে জ্ঞানের পরিসীমা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পরিবেশ ও অনুকূল পরিস্থিতির অনুপস্থিতি মানুষকে দ্বান্দ্বিক করে তোলে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এর প্রকৃত কারণ কে জানে?

তবে দ্বান্দ্বিক অবস্থান থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত ভুল অথবা সঠিক কি না তা অনেকাংশে আপেক্ষিক বলা যায়। সময়ের চাহিদা নিরূপণে মানুষ অত্যাবশ্যকীয় পথ বেছে নিয়েছে, আর এভাবে অতিক্রম করেছে শত-সহস্র কাল। এসব মহাকালে সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তিজীবনের ক্রমাধিকারে ঘটিত, চর্চিত, ব্যবহৃত, ভোগকৃত বিষয়াবলীর দ্বান্দ্বিক অংশ হয়ত অপ্রচ্ছন্ন রয়ে গেছে। তবে সে সময়ের অপ্রচ্ছন্ন বিপরীত বিকল্প অথবা সিদ্ধান্ত যথাযথ হতো কি না তা নিয়ে নিশ্চয়ই সব সময় বিতর্ক হতে পারে। সত্যিকার অর্থে এটি আপেক্ষিক বিষয়ও বটে। আবার অনেকে মনে করেন, যে জীবন তারা অতিবাহিত করছেন, তা শুধুই প্রকৃতি কর্তৃক নির্ধারিত। জীবনের নিয়মেই সব ঘটে যাচ্ছে, যেখানে হস্তক্ষেপ করে গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ তার বা তাদের জন্য কঠিন, অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব। একদল মানুষ ভাবেন, জীবন হলো এক ধরনের সাপ-লুডু খেলার খোদাইকৃত শ্বেতপাথরের নান্দনিক ঘুঁটি। এখানে অবশ্যম্ভাবী কাক্সিক্ষত বস্তু বা ব্যক্তি ধরা দিয়ে নিমিষে হারিয়ে যায় মরীচিকার মতো। বহু দ্বান্দ্বিক চিন্তা ও সমীকরণ হয়ত প্রভাবিত করে এ অসমাপ্ত ধারাপাতে। এসব কথার যুক্তি আছে। মানব জীবন ঝঞ্ঝাটপূর্ণ এবং এটি যে সব কাল, মহাকাল, স্থানে অন্তর্নিহিত তার রূঢ় বাস্তবতা স্বীকৃত।

দার্শনিক ডেকার্তের বহু পুরোনো দর্শন হলো, যেকোনো সংশয় অস্তিত্বের প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসে। সুতরাং অতীতের সংশয় আর দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতি ভুলে জীবনকে অর্থবহ করে এগিয়ে নেওয়াই হলো মানবের কাজ। তাই আইন ও সমাজ-বিরুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও কর্ম ব্যতীত দ্বান্দ্বিকতায় নিহিত এবং কখনো গৃহীত সিদ্ধান্ত সঠিক না হওয়ার কারণ খুঁজে বেড়ানো বোকামি। হাজার অনুযোগের পরও জীবন অনেক সুন্দর। মানুষের কোনো ভুল নেই, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া।

লেখক: সরকারি কর্মকর্তা

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :