সালথায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ, গৃহবধূকে উদ্ধার করল পুলিশ

ফরিদপুরের সালথায় যৌতুকের দাবিতে আরিফা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে গৃহবন্দী করে যৌতুক দাবি করে নির্যাতন চালায়।
খবর পেয়ে গত রবিবার মধ্যরাতে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদী গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বর্তমানে নির্যাতিত গৃহবধু ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
আরিফা আক্তারের পরিবার জানান, ২০২০ সালে সালথার কাগদী গ্রামের কৃষক মফিজুর শেখের ছেলে মে. হাসান শেখের (২৫) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার বিবিরকান্দী গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল কাশেম মাতুব্বরের মেয়ে আরিফা আক্তারের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আরিফা বাবার কাছ থেকে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকা নিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বছরখানেক পর আবার নির্যাতন শুরু হয়। এভাবেই প্রায় ৩ বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছিল আরিফা।
তাদের সংসারে হাবিবা আক্তার নামে দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সর্বশেষ রবিবার রাতে বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রী আরিফার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন হাসান ও তার পরিবার। এতে আপত্তি জানালে আরিফার ওপর সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন করে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য আরিফার পিতা সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরিফা আক্তার বলেন, সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর সংসার করে আসছি। কিন্তু আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের অমানবিকতা এবং নির্যাতন মোটেও বন্ধ হয়নি। যৌতুকের জন্য প্রায় সময়ই তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। বিদেশ যাওয়ার নামে ৫ লাখ টাকার জন্য রবিবার রাতেও আমাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করে বাসায় বন্দী করে রাখে। উপায় না পেয়ে আমি মোবাইলে আমার বাবাকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে আরিফার স্বামী হাসান শেখ বলেন, বিয়ের সময় মেয়ের বাবার পক্ষ থেকে আমাকে পাকা ঘরসহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তারা আমাকে তেমন কিছু দেয়নি।
তিনি বলেন, এটি সাংসারিক বিষয়। এ অভিযোগ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই
সালথা থানার এসআই রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।
আরও পড়ুন: বরিশাল সিটি নির্বাচন: নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনি উপদেষ্টা কমিটি গঠন
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ পাই। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/এসএম)

মন্তব্য করুন