বরগুনায় যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার ৩

বরগুনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ মে ২০২৩, ১৯:০১

বরগুনার পাথরঘাটায় যুদ্ধাপরাধের মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪। সোমবার ভোরের দিকে পাথরঘাটা উপজেলার নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছহেরাবাদ এলাকার মৃত নাদের আলী খানের ছেলে ফজলুল হক খান (৭০), মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. ইউসুফ আলী (৭৫) এবং পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ছোট টেংড়া এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৬৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ২০১৭ সালের ২২ মে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মান্নান হাওলাদার, ভাই আবদুর রাজ্জাক, বোন জামাতা হযরত আলীসহ ৪ থেকে ৫ জন খাকি পোশাকধারী ও ৫ থেকে ৭ জন অজ্ঞাত সাদা পোশাকধারীকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলা নম্বর সিআর-১২২/২০১৭।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কাঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান আবু পাথরঘাটা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজওয়ানুজ্জামানের আদালতে আবেদন করলে আইনি পর্যালোচনা শেষে ওইদিন বিকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তরের আদেশ দেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলাটি আমলে নেন।

মামলার আবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৯ জুন মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে রাজাকার জালালের বাড়ির সামনে ওয়াপদার ওপরে বসে হত্যার উদ্দেশে গলায় ছুড়ি চালায়। পরদিন ৩০ জুন চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে হত্যা করতে না পেরে আপন চাচা সুরেন্দ্র নাথ অধিকারীকে হত্যা করে লাশ গোপন করে ফেলে। ১৮ আগস্ট বাদির বাবা মতিয়ার রহমান ও ১নং সাক্ষী মনমথ রঞ্জন মিস্ত্রীর বাবা মনোহর মিস্ত্রী চাচা কর্নধর মিস্ত্রীকে দিনের বেলা গুলি করে হত্যা করে। পরে মনোহরের বাড়ি অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

মামলার আবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৯ জুন মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে রাজাকার জালালের বাড়ির সামনে ওয়াপদার ওপরে বসে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ছুড়ি চালায়। পরদিন ৩০ জুন চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে হত্যা করতে না পেরে আপন চাচা সুরেন্দ্র নাথ অধিকারীকে হত্যা করে লাশ গোপন করে ফেলে। ১৮ আগস্ট বাদীর বাবা মতিয়ার রহমান ও ১ নম্বর সাক্ষী মনমথ রঞ্জন মিস্ত্রীর বাবা মনোহর মিস্ত্রী চাচা কর্নধর মিস্ত্রীকে দিনের বেলা গুলি করে হত্যা করে। পরে মনোহরের বাড়ি অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।

মামলার বাদী মিজানুর রহমান আবু বলেন, বাবা হারা আজ ৫২ বছর। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমার বাবাসহ প্রতিবেশী দুই ভাইকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। দীর্ঘদিন পর হলেও সেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

তিনি আরও বলেন, এ বিচার দ্রুত কার্যকরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, র‌্যাব তিনজনকে থানায় নিয়ে এসেছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হাজির করবেন বলে জানা যায়।

আটকের বিষয় নিশ্চিত করে র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, যুদ্ধাপরাধ মামলায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না বলে মিডিয়া কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন। র‌্যাব-৪ এর মিডিয়া কর্মকর্তার সরকারি ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।

পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এম. খালেক বলেন, দীর্ঘ বছর পর হলেও যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এর দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

(ঢাকাটাইমস/৯মে/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :