১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস: আমিষের ৮ শতাংশ আসে দুগ্ধ সেক্টর থেকে

কৃষিবিদ মো. সামছুল আলম
| আপডেট : ০১ জুন ২০২৩, ১৬:৩৮ | প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৩, ১৬:৩০

বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা(এফএও) ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস হলো বিশ্ব দুগ্ধ দিবস । ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন দিবসটি পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বব্যাপী। ডেইরি খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশে দুধ দিবস উদযাপিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো" দুগ্ধ উপভোগ করুন "এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস- ২০২৩।

দুধ হল স্তন্যপায়ী প্রাণীর স্তন্যগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এক প্রকার সাদা তরল পদার্থ এবং দুধ মানুষের একটি প্রধান খাদ্য। অন্যান্য খাদ্যগ্রহণে সক্ষম হয়ে ওঠার আগে এটিই হল স্তন্যপায়ী শিশুদের পুষ্টির প্রধান উৎস। স্তন থেকে দুগ্ধ নিঃসরণের প্রাথমিক পর্যায়েকোলোষ্ট্রাম সমৃদ্ধ শাল দুধ উৎপন্ন হয়, যাতে মায়ের দেহ হতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শিশুর দেহে নিয়ে যায় এবং রোগাক্রান্ত হবার ঝুঁকি কমায়। এতে আমিষ ও ল্যাক্টোজ সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। আন্তঃপ্রজাতির দুধ গ্রহণ করা অস্বাভাবিক নয়, বিশেষত মানুষের ক্ষেত্রে, যারা অন্য অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর দুধও গ্রহণ করে থাকে।

দুধ সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী। দুধের মধ্যে ভিটামিন সি ছাড়া রয়েছে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান। বিশ্ব দুধের উপকারিতা সম্পর্কে পুষ্টি বিশেষজ্ঞগণ বলেন, দুধ হলো ক্যালসিয়ামের খুব ভালো একটি উৎস। আর ক্যালসিয়াম সব বয়সের মানুষের জন্য জরুরি উপাদান। আমরা জানি মানবজীবনের শুরু হয় দুধ দিয়ে। শিশু কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের জন্য দুধ ভীষণ প্রয়োজনীয় খাবার। যেসব শিশু জন্মের পর ঠিকভাবে দুধ খেতে পায় না, তারা অধিকাংশ সময় কোয়াশিয়রকর, ম্যারাসমাস নামক অপুষ্টিজনিত অসুখে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া দুধ ও দুধজাতীয় খাবারের অভাবে বয়স্ক ব্যক্তিরা অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস অর্থাৎ হাড়ের দুর্বলতা ও হাড়ের ভঙ্গুরতাজনিত অসুখে আক্রান্ত হন।

দুধ গর্ভাবস্থা এবং মাতৃদুগ্ধ দানকালে প্রত্যেক মায়ের জন্য আবশ্যকীয় উপাদান। আমাদের সমাজে দেখা যায়, মায়েরা নিজেরা দুধ না খেয়ে বাসার অন্যদের খেতে দেন। গর্ভাবস্থা ও মাতৃদুগ্ধদানকালে প্রত্যেক নারীর প্রতিদিন অন্তত এক কাপ দুধ খাওয়া উচিত। সব বয়সের মানুষকেই দুধ খেতে হবে। যাঁরা দুধ হজম করতে পারেন না, তাঁদের উচিত দুধ দিয়ে তৈরি খাবার সেমাই, পুডিং, পায়েস, দুধসুজি, দুধভাত, দুধমুড়ি, দই, ঘোল, পনির ইত্যাদি খাওয়া। এছাড়া দুধ ভিটামিন ডির ভালো একটি উৎস। ভিটামিন ডি হাড়, দাঁত, চুল, নখ ও ত্বকে পুষ্টি জোগায়। রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া দুধে রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ, বিভিন্ন ধরনের খনিজ লবণ, আয়োডিন, পটাশিয়াম, ফোলেট, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন (বি৬, বি১২), জিংক, ফ্যাট ও ক্যালরি।

অন্যদিকে দুধের মধ্যে রয়েছে ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, যাঁরা ওজন কমাতে চান বা উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের রোগী, তাঁরা ফ্যাটফ্রি দুধ খাবেন। দুধের মধ্যে রয়েছে গ্লুটাথিয়ন (এষঁঃধঃযরড়হব) নামক একধরনের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা আমাদের মষিÍষ্কে সেরোটোনিন (ঝবৎড়ঃড়হরহ) নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। আর এ সেরোটোনিন আমাদের মন ভালো রাখে, নিদ্রাহীনতা দূর করে এবং খাবারে রুচি বাড়িয়ে কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে।

ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদনকারী এবং সামান্য ননি ছাড়া দুধ ও গুঁড়া দুধ রপ্তানিকারী দেশ। মোট দুধের ৫২.৫% ইউরোপ থেকে রপ্তানি করা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানিকারক নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানির প্রায় দ্বিগুন রপ্তানি করে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দুগ্ধ পণ্য রপ্তানিকারক যথাক্রমে নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্র। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ চীন এবং রাশিয়া।

সারা বিশ্বে উৎপাদিত দুধের প্রায় শতকরা ৮৫ ভাগ গরুর দুধ। মানব দুধ বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হয় না। মানব দুগ্ধ ব্যাংক মায়েদের দান করা স্তন্যদুগ্ধ সংগ্রহ করে এবং শিশুদের মাঝে বণ্টন করে। সে মানব দুধ দিয়ে বিভিন্ন কারণে (অপরিনত নবজাতক, শিশুর এলার্জি, বিপাকীয় রোগ, ইত্যাদি) যারা স্তন্যপান করতে পারে না তারা উপকার পেতে পারেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে দুধের মূল উৎস গরু। শতকরা ৯০ ভাগ দুধ আসে গরু থেকে, ৮ শতাংশ আসে ছাগল থেকে এবং ২ শতাংশ আসে মহিষ থেকে। ১৯৮৯-৯০ থেকে ২০০১-২০০২ অর্থবছর পর্যন্ত দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ২.৪ শতাংশ, ২০০৯-১০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির হার প্রায় ২০ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে দুধের উৎপাদন ছিল ২৩.৭০ লাখ টন, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১০৬.৮০ লাখ টন এবং সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩০.৭৪ লাখ মে. টন দুধ উৎপাদিত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী, একজন মানুষকে গড়ে দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা উচিৎ। তবে বর্তমানে মাথাপিছু দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ২০৮.৬১ মিলিলিটার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত এক যুগে দেশের দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৫গুণ । মোট আমিষের ৮ শতাংশ আসে দুগ্ধ সেক্টর থেকে। তাছাড়া ডেইরি ইন্ডাস্ট্রি এখন দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্প। এই ইন্ডাস্ট্রি দেশের মানুষের পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে যে অবদান রাখছে, তা অনস্বীকার্য। এর সাথে জড়িত আছে বিশাল শ্রমশক্তি। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২০ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে এবং পরোক্ষভাবে শতকরা ৫০ শতাংশ প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে দেশে ক্রমবর্ধমান জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।

গরু ও ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। দুধ উৎপাদনের বৈশ্বিক সূচকেও কয়েক বছর ধরে এ দেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বেশ কয়েক বছর ধরে ছাগলের দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে মোট দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২৩তম।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ দুধ উৎপাদন হয় এশিয়াতে।

মাছ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এখনো সম্ভব হয়নি। এছাড়া এর কারণ হিসেবে আরো উল্লেখ করা যায়,কিছু মজুতদার ও অতিমুনাফালোভী প্রাণিখাদ্য তৈরিতে বাইরে থেকে যে উপাদান আনতে হয় তা অতিরিক্ত নিয়ে তারা সেটা গুদামজাত করে রেখে কৃত্রিম সংকট দেখান। তাছাড়াও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের অভাব, মানসম্পন্ন দুধ সরবরাহ না করা, ভেটেরিনারি চিকিৎসক সংকট, দুধ প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণ করতে না পারা, ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং বিদ্যুতের মূল্য, গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি দুগ্ধ উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল নিউট্রিশন বিভাগের একাধিক শিক্ষকের জোট ইন্টিগ্রেটেড ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্ক (আইডিআরএন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প। এটি জার্মানিভিত্তিক আইএফসিএন-ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্কের সঙ্গে কাজ করে। দুই প্রতিষ্ঠানের কাজ দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম, বৈশ্বিক বাজার, ভোক্তা, উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করা।আইডিআরএন ও আইএফসিএন-ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্কের তথ্য অনুসারে, বৈশ্বিকভাবে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ভোক্তাপর্যায়ে দুধের দাম বেড়েছে প্রায় ১১ ভাগ। খামার পর্যায়ে এ মূল্য বেড়েছে ২ শতাংশ। এর বিপরীতে বাংলাদেশে গোখাদ্যের পরিমাণ বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক পর্যায়ে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ। গত এপ্রিল মাসের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে গোখাদ্যের দাম বৈশ্বিক দামের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।

বর্তমানে দেশের বাজারে দুধের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ হচ্ছে তরল দুধের মাধ্যমে। দুগ্ধ খাত-সংশ্লিষ্টদের হিসেবে দেশে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার গুঁড়া দুধ আমদানি করা হয়, যা মোট দুধের চাহিদার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া আমদানি করা গুঁড়া দুধ, পাস্তুরিত দুধ, ফর্টিফায়েড দুধ এমন নানা ধরনের দুধ পাওয়া যায় বাজারে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৬৮ শতাংশ পরিবার দুধের পুষ্টির জন্য গুঁড়া দুধের ওপর নির্ভর করছে। গত তিন বছরে এই চাহিদা প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে গুঁড়া দুধের দাম ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত প্রায় ১২ বছরের ভেতর সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে দুধ বাজারজাতকরণের জন্য আনুষঙ্গিক খরচ যেমন জাহাজভাড়া, প্যাকেজিং খরচ ইত্যাদিও ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

মেধাবী জাতি বিনির্মাণে দুধের চেয়ে ভালো খাবার আর নেই। তাই সরকার মানসম্পন্ন দুধ উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে। দুধের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে গবাদি পশুর জাত উন্নয়ন, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার ব্যবস্থা জোরদারকরণ, দুগ্ধজাত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণসহ স্কুলফিডিং-এর মাধ্যমে দুধপানের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে দুগ্ধশিল্প উন্নয়নে ৪(চার) হাজার ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (এলডিডিপি) প্রকল্প’ চলমান রয়েছে। যা দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

দুধের বিপণন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০০টি ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার (ভিএমসিসি) স্থাপন করা হচ্ছে।এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় আমরা সারা দেশে পাঁচ হাজার ৫০০ দুধ প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি করা হচ্ছে। ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (এলডিডিপি) প্রকল্পের বিশেষজ্ঞদের মতে , বৈশ্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে। সর্বোপরি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সকল ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে উন্নত সম্মৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিনিত হবে।

লেখক: গণযোগাযোগ কর্মকর্তা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :