আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া রাস্তায় আসুন, ওবায়দুল কাদেরকে মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ২২:১০ | প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২৩, ১৮:৪৫

পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে রাস্তায় ডাকলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বলেন, ‘আসুন না, রাস্তায়। পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া। দেখবেন কার কত সাহস। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দেখবেন, কার কত সাহস আর শক্তি। জনগন আপনাদের কি করে তাও দেখবেন।’

লোডশেডিং, বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রার আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে হাতে নিয়ে সব কুট কৌশল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলো। কারণ, তারা বুঝতে পারলো নির্বাচনে গেলে জনগণ তাদেরকে কেউ ভোট দেবে না। কারণ, তারা ভালো কিছু করেনি। এই ভয়ে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়।’

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানে মানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। নইলে পালাবার পথ টুকুও পাবেন না। এখন তো আবার আমেরিকা আপনাদের পালাবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।’

কয়লা নাই, গ্যাস নাই, কেন ভাই?

‘জনগণের পকেট কাটাই’ আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র কাজ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এমন একটা জিনিস নেই যেখান থেকে সরকার পকেট কাটে না। এখন সময় আসছে এই পকেট কাটাকে ধরার।’

‘সরকার এখন বলে কয়লা নাই, গ্যাস নাই। কেন ভাই? টাকা তো আগে নিয়ে নিছো। টাকা কই গেল? সব পাচার করেছো। মোবাইল থেকে তারা পকেট কেটে নেয়। বিদ্যুতের কার্ডে টাকা ঢুকালে দেখবেন তিনশ টাকা নেই। কেটে নিয়ে গেছে শেখ হাসিনা। এভাবে এক বছরে আমাদের ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কারণে বেকায়দায় সরকার:

বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির কারণে সরকার বেকায়দায় পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ভিসানিতির কারণে বেকায়দায় পড়ে তারা পাচার করা টাকা নিয়ে আনছে। আবার সেই টাকায় আড়াই পার্সেন্ট ইনসেনটিভ দিতে হচ্ছে।’

‘এখন টাকা পাচারকারীদের পুরস্কার দেয়া শুরু হয়েছে। এখন চুরি করেও পুরস্কার পাওয়া যায়। সরকারের গলা বাজি শেষ হয় না। মিডিয়ার ওপর খড়গ বসে আছে। সাংবাদিকরা মন খুলে কিছু বলতে পারে না।’

এ দেশ সবার অথচ কোনো কথা বলার অধিকার নেই:

বাংলাদেশ প্রত্যেক নাগরিকের দেশ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশটা কারো বাবার নয়, এটা আপনার আমার সবার দেশ। সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু সেই দেশে কোনো কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে এই সরকার আমাদের বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রেখেছিল। এখন ঘরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে সরকার। আমাদের এমন নেতা নেই যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা নেই।’

সিইসির বক্তব্যে ধিক্কার জানালেন মির্জা ফখরুল:

বরিশাল সিটিতে ভোটের দিন মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের নেতা মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের এক মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

সিইসি বলেছিলেন, ‘উনি (প্রার্থী) কি ইন্তেকাল করেছেন? না, উনি কি কতটা… আমরা যেটা দেখেছি, ওনার কিন্তু রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি, ওনাকে কেউ পেছন দিক থেকে ঘুষি মেরেছে।’

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল সিইসির সমালোচনা করে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কি চেয়েছিলেন বরিশালের মেয়রপ্রার্থী মারা যাক? ধিক্কার জানাই তার এমন কথায়।’

সিরাজুল আলম খানকে মৃত্যুর পরও সম্মান দেয়নি আ.লীগ:

দেশের রাজনীতিতে রহস্যপুরুষ খ্যাত সদ্য প্রয়াত সিরাজুল আলম খানকে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ তাকে মৃত্যুর পর সম্মান পর্যন্ত দিলো না। একটি শোকবার্তাও দেয়নি এই সরকার।’

‘কারণ, সিরাজুল আলশ খান তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাদের তৈরি রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় এই রক্ষীবাহিনী ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ছিল।’

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের মহানগরের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার করেছে এই সরকার। এরা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানেছে না। আমাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করলেও আন্দোলন বন্ধ হবে? হবে না।’

‘এ সরকারের লজ্জাও লাগে না। তারা ক্ষমতায় আসার পর দেশের অবস্থা বারোটা বাজিয়েছে। স্বয়ং আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন, এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর চায় না। তিনি জানতেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বাটপার, চোর, লুণ্ঠনকারি। তাই তিনি আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করেছিলেন।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপিন যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/জেবি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ঢাকার বাতাসে উচ্চমাত্রায় ক্যানসারের উপাদান

দলের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নয়: পরিবেশমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ নয়, দেশ চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি: মির্জা ফখরুল 

যুগোপযোগী ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

কৃষিতে আধুনিক যান্ত্রিকীকরণে ফসল উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে: সিমিন হোসেন

রেলকে সুস্থ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি: রেলমন্ত্রী 

দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

১০ জুন থেকে চালু হবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন

বঙ্গোপসাগরে ‘এমভি আবদুল্লাহ’, কুতুবদিয়ায় পৌঁছাবে সোমবার 

তিন দিনব্যাপী বর্জ্যের প্রদর্শনী চলছে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :