মাদারীপুরে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ, শিশু আক্রান্তের হার বেশি

মাদারীপুরে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গড়ে প্রতিদিন শুধুমাত্র জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী। শিশু আক্রান্তের হার বেশি। আসন সংকট থাকায় অনেকেই ফ্লোরে নিচ্ছেন চিকিৎসা। এমতাবস্থায় হিমশিম অবস্থা নার্স ও চিকিৎসকদের।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, মাদারীপুর সদরের বোয়ালিয়া এলাকার পারভীন বেগম ও তার ৫ মাসের যমজ দুই শিশু ঐশী আর আরশিকে নিয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। একসাথে মা ও দুই শিশুর ডায়রিয়া হওয়ায় বাড়ছে ভয়।
এদিকে শ্রীনদী এলাকার ৬ মাসের আফিয়া টানা ৮ দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ঘনঘন পাতলা পায়খানা হওয়ায় চিন্তিত পরিবারের সদস্যরা।
একই অবস্থা ভর্তি হওয়া অন্য রোগীদেরও। নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ফ্লোরে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।
জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৩৬ জনসহ ১৫ দিনে শুধুমাত্র সদর হাসপাতালে ভর্তি সাড়ে ৪শ রোগী। একসঙ্গে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা। এ অবস্থায় খাবার আগে ও পরে হাত ধোয়ার পাশাপাশি বাইরের খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী পারভীন বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রথমে আমি, পরে আমার যমজ দুই মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাই দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখনও চিকিৎসা চলছে।
আফিয়ার মা মুন্নী বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, বাচ্চার একটানা ৮ দিন ধরে ডায়রিয়া। প্রথমে প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তার দেখাইছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। খুবই চিন্তিত, এখনো ডায়রিয়া কমছে না।
আব্দুস সামাদ নামে এক রোগী ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রচণ্ড গরম আবার খাবারে সমস্যা হওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। স্যালাইন ও ওষুধ চলছে। তারপরও ভয় হচ্ছে। সুস্থ্ হলে বাড়ি চলে যাবো।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নুপুর নাগ ঢাকা টাইমসকে বলেন, হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্তের রোগীর চাপ বেড়েছে। একসঙ্গে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে মাঝে মাঝে কষ্ট হয়। তবু সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালের জনবল সংকট কেটে গেলে আরো বেশি সেবা দেওয়া যাবে।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিন আরেফিন ঢাকা টাইমসকে জানান, ডায়রিয়া রোগীর জন্য ৬টি আসন থাকলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ১৫টি করা হয়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে হাসপাতালে এসে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কাবিটা প্রকল্পে শ্রমিকের বদলে ড্রেজার, বিলের টাকাও উত্তোলন
তিনি বলেন, শিশুদের প্রতি আরও যত্নবান হতে হবে। এছাড়া বাইরের খাবার পরিহার করাটা জরুরি। খাবার খাওয়ার আগে ও পরে ভালো করে দুই হাত ধুতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসএম)

মন্তব্য করুন