ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় নিয়ে পেটালেন এডিসি হারুন

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। এসময় একজনের প্রায় সব দাঁত তুলে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নারীঘটিত বিষয় নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে।
শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে একজন হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং অপরজন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।
বর্তমানে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেছেন।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর রাতেই শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে ঘটনা মীমাংসা করেন।
জানা গেছে, এডিসি হারুন শনিবার বিকালে ৩৩তম বিসিএসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী পরিচয় দেওয়া ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। একপর্যায়ে সেখানে এডিসি হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
অবশ্য পুরো ঘটনাই অস্বীকার করেন এডিসি হারুন।
এই কর্মকর্তার একাধিক ব্যাচমেটের দাবি, নারী পুলিশ কর্মকর্তা ৩৩তম বিসিএসের। তিনি চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসক দেখাতে এডিসি হারুনের সহযোগিতা চান।
তাদের দাবি, চিকিৎসকের কাছে এই নারী পুলিশ কর্মকর্তা যাওয়ার সময় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ এডিসি হারুনের সঙ্গে ছিলেন। এসময় ছাত্রলীগের ওই নেতাদের নিয়ে সেখানে হাজির হন তার স্বামী দাবি করা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। পরবর্তীতে হারুনের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা ঘটে, যা হাতাহাতি রূপ নেয়। পরে ঘটনাস্থলে যান নিউমার্কেট জোনের এডিসি শাহেন শাহ মাহমুদ। তবে তিনি পুরো ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘মারধরের এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তবে হাঁটার সময়ে আমাদের এক অফিসারের সঙ্গে অন্য এক অফিসারের ধাক্কা লাগে। তা নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হলেও বিষয়টা সমাধান হয়ে গেছে।’
এর আগেও নিজ সহকর্মীকে প্রকাশ্যে থাপ্পড়, সাংবাদিক নির্যাতন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা বৃদ্ধির আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর একাধিকবার হামলার অভিযোগ আছে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় নিজ সহকর্মীকে চড় মারেন এডিসি হারুন। ঘটনাটির একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি। এছাড়াও, বিভিন্ন আন্দোলন দমনে তাকে লাঠি হাতে আন্দোলনকারীদের পেটাতে দেখা যায়।
এর আগে সর্বশেষ গত মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের পেটান হারুন। প্রতিবার পুলিশ তার ঘটনায় শুধু দুঃখ প্রকাশ করে।
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এসএস/এফএ)

মন্তব্য করুন