বিএনপি নেতা জি কে গউছের রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, হবিগঞ্জ
| আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৭ | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৬

বিএনপি নেতা জি কে গউছের রিমান্ড এবং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৫ সালে হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় জি কে গউছকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়েরকৃত পুলিশের একটি মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার আইও (ওসি তদন্ত) বদিউজ্জামান।

অপরদিকে জি কে গউছের আইনজীবি তার জামিন আবেদন করেন। আদালত শোনানি শেষে রিমান্ড এবং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আফজাল হোসেন।

এদিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় জি কে গউছকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন জি কে গউছকে এক নজর দেখার জন্য।

অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে নিজ কক্ষে ফিরার পথে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে একাধিক খুনের মামলার আসামি যুবলীগ কর্মী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন।

এ ঘটনায় হবিগঞ্জ কারাগারের জেলার মো. শামীম ইকবাল বাদী হয়ে হামলাকারী ইলিয়াছকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই সাহিদ মিয়া। আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২০ জুলাই হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল আলীম রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্ত্রাসী ইলিয়াছকে দেড় বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

ইলিয়াছ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দাউদনগর গ্রামের সালেহ আহাম্মদ কনার পুত্র ।

অপরদিকে একই ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই সানা উল্লা বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় জি কে গউছকে আসামি করা হয়। মামলাটি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত তদন্তাধীন রয়েছে। দীর্ঘ দিন পর এই মামলায় জি কে গউছকে গ্রেপ্তার দেখাতে আদালতে আবেদন করেন মামলার আইও (সদর থানার ওসি তদন্ত) বদিউজ্জামান। গত ৫ সেপ্টেম্বর শোনানি শেষে আদালত জি কে গউছকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ডিভিশন- ১ (প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা) দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট রাত ৭টার দিকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ জি কে গউছকে আটক করে। ৩০ আগস্ট ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকা সিএমএম কোর্টে হাজির করা হয়। একই সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদের দিন হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় জি কে গউছকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবির কোতয়ালী জোনাল টিমের উপপরিদর্শক আফতাবুল ইসলাম।

শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে হাজির করে আবারও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করে ঢাকা কেন্দ্ৰীয় কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর জি কে গউছকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হবিগঞ্জ কারাগারে নিয়ে আসা হয়।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান- গত ১৯ আগষ্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বিএনপির পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে ১২শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়।

পরের দিন ২০ আগস্ট বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি বাদী হয়ে ২ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

এই ৩টি মামলার আসামিদের জামিন করতে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা জি কে গউছ গত ২৯ আগস্ট হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট জি কে গউছসহ বিএনপির ১৮৩ নেতাকর্মীর ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। জামিন পেয়ে ২৯ আগস্ট রাত ৭টার দিকে বাসায় ফিরার পথে হাইকোর্ট এলাকা থেকে জি কে গউছকে আটক করে নিয়ে যায় ঢাকার ডিবি পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :