কাজে আসছে না ফেনীর পরশুরামের ৪ কোটি টাকার রাবার ড্যাম

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
  প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৯| আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০৬
অ- অ+

২০০৬ সালে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ফেনীর পরশুরামের রাবার ড্যামটি নির্মাণের পর শুষ্ক মৌসুমে অন্তত চার হাজার হেক্টর জমি আবাদের আওতায় আসে। কিন্তু দুই বছর পর এটি অকেজো হয়ে যায়। এরপর থেকে কৃষক ইঞ্জিনচালিত সেচ বসিয়ে পানি তুলে চাষাবাদ করলেও ফসলি জমির বড় একটি অংশ হয়ে পড়ে অনাবাদি।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, পাউবো কর্তৃপক্ষ কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই পরশুরামের বেড়াবাড়িয়ায় রাবার ড্যামটি নির্মাণ করেছে। ভৌগোলিকভাবেই ফুলগাজী উপজেলার তুলনায় পরশুরাম উপজেলা উঁচু। বোরো মৌসুমে পরশুরামে রাবার ড্যামটি ফোলানো হলে ফুলগাজী এলাকায় কহুয়া নদীতে পানি পাওয়া যায় না। বোরো মৌসুমে পানি সংকটে সব জমি চাষাবাদের আওতায় আনা যাচ্ছে না। কয়েকজন কৃষক ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইঞ্জিনচালিত সেচ বসিয়ে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ করলেও বিস্তীর্ণ এলাকা অনাবাদি পড়ে থাকে। রাবার ড্যামের বিষয়ে স্থায়ী সমাধান চাই। আমরা কোনো জমিই অনাবাদি রাখতে চাই না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ বাড়াতে সরকার ২০০৬ সালে পরশুরাম পৌরসভার বেড়াবাড়িয়া এলাকায় কহুয়া নদীতে একটি রাবার ড্যাম স্থাপন করে। ডিপিপি প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৫৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ড্যামটি স্থাপন করা হয়। এটি স্থাপনের পর আশপাশের এলাকার অন্তত চার হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় আসে। ড্যামের মাধ্যমে আটকানো ১০-১৫ ফুট পানি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমেও আবাদ শুরু হয় বেড়াবাড়িয়া, সাতকুচিয়া, সলিয়া, উত্তর গুতুমা, কোলাপাড়া ও বাসপদুয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ জমিতে। চাহিদা অনুযায়ী পানি পাওয়ায় কৃষকও চাষাবাদে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। কিন্তু দুই বছর পরই ড্যামটি অকেজো হয়ে যায়।

কৃষকের দাবি, শুষ্ক মৌসুমে রাবার ড্যামটি ফোলানো হয় না। তাই কহুয়া নদীতে পানি আটকানো যায় না। এ অবস্থায় আশপাশের কৃষক বেকায়দায় পড়ে ইঞ্জিনচালিত সেচ স্থাপন করে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ করে আসছেন। এতে কমে গেছে ওই এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে চাষের জমি। শুষ্ক মৌসুমে প্রতি বছর অনাবাদি পড়ে থাকে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

পরশুরাম উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মতিউর রহমান জানান, বোরো মৌসুমে এটি ফোলানো হলে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা যাবে। বছরের পর বছর এটি ফোলানো না হওয়ায় অনেক কৃষক পানির অভাবে জমি আবাদ থেকে বিরত রয়েছেন।

রাবার ড্যামটির তত্ত্বাবধায়ক ছাবু মিয়া জানান, রাবার ড্যাম সচল আছে। ওপরে কাভার ফেটে গেলেও ভেতরে টায়ার ঠিকমতো রয়েছে। রাবারে কোনো সমস্যা নেই। ভারতের উজানের পানি দুই নদীতে আসে। বেড়াবাড়িয়া রাবার ফোলালে পানি মুহুরী নদীর দিকে চলে যায়। এজন্য রাবার ফোলানো হয় না। মুহুরী নদীর কাছে আরেকটি রাবারের বাঁধ হলে পরশুরাম এলাকার পানি স্থির থাকবে।

পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘কহুয়া নদীর পানির ওপর নির্ভর পরশুরাম পৌরসভা ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের ১ হাজার ১০০ কৃষক। আগামী বোরো মৌসুমে রাবার ড্যামটি ফোলানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা মাসিক সভায় প্রস্তাব রাখা হবে। এটি ফোলানো হলে পরশুরাম এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে আবাদ বাড়বে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান ভুঁঞা বলেন, পরশুরামে স্থাপিত রাবার ড্যামটি সচল আছে। তবে এটি ফোলালে পরশুরামের কৃষক খুশি হলেও ফুলগাজী অংশের কৃষক পানি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। যার কারণে এটি ফোলানো হয় না। তবে কৃষি বিভাগ এটি ফোলানোর জন্য বললে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব।

(ঢাকা টাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সিলেট সীমান্তে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করল ভারত
হজ পালনে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৩৭ হাজার ১১৫ বাংলাদেশি
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করে প্রাকৃতিক দাওয়াই বাঙ্গি ফল
মাদারীপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ঢাকায় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা