বাবার দেওয়া আগুনে দুই শিশুর পর চলে গেলেন মা
লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলায় বসতঘরে বাবার দেওয়া আগুনে দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল ঘটনাস্থলেই। এবার দুই সন্তানের জননী সুমাইয়া আক্তার মুন্নিও (৩৪) চলে গেলেন সন্তানদের কাছে।
শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিন রাতে লক্ষ্মীপুরে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৮ নভেম্বর কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামে নিজের বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। তখন তার ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী ওই ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনার দিনই দুই সন্তান মারা যায়। চারদিন পর স্ত্রীরও মৃত্যু হলো।
ওইদিন ঘটনাস্থলেই প্রথমে তার মেয়ে আয়েশা আক্তার (৭) ও ঢাকায় আনার পর ছেলে আব্দুর রহমানের (৩) মৃত্যু হয়। অন্যদিকে কামালের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার মুন্নি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। কামাল সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বশিকপুর গ্রামের পুরান চতইল্লার বাড়ির আমিন উল্ল্যাহর ছেলে ও পেশায় অটোরিকশা চালক। গ্রেপ্তারের পর তিনি ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় গত ৩০ নভেম্বর মুন্নির বাবা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে কামালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার কামাল বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে আছেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী মোস্তফা সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর এলাকার বাসিন্দা।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, কামাল মাদকসেবী ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে তার পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরেই ঘরে আগুন দিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের ভেতরে আটকে রাখেন। মুন্নির মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে ময়নাতদন্ত করা হবে। সেখান থেকে মরদেহ তার বাবার বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানেই দাফন সম্পন্ন করা হবে।
পোদ্দার বাজার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযুক্ত কামালকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এখন কারাগারে।
(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/এসএস/এআর)