উন্মুক্ত লাইব্রেরি: নাগরিক কোলাহলে বইয়ের কলতান

শেখ শাকিল হোসেন, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৩| আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩০
অ- অ+

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক। চার রাস্তার সংযোগস্থল, অধুনা মেট্রোস্টেশন, ভ্রাম্যমাণ খাবার বিক্রেতাদের হাঁকডাক; সবমিলিয়ে নাগরিক কোলাহলে মুখর থাকে জায়গাটি। ফটক দিয়ে ঢুকতেই হাতের বাম দিকটা নজর কাড়ে। এক সময়ের ভাগাড়ে গড়ে উঠেছে লাইব্রেরি। তবে, গতানুগতিক ধারার লাইব্রেরি নয়। এ যেন কোলাহলে বইয়ের কলতান; নাম উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

উন্মুক্ত পরিসরে বই পড়া এবং বই পড়ার মানসিকতা তৈরির পাশাপাশি মানুষকে সংস্কৃতিমনস্ক ও চিন্তাশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই ডাকসুর সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের উদ্যোগে যাত্রা এটির।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপন্যাস, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, কবিতা, ছোটদের বই, ইতিহাস, রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই সাজানো আছে শেলফে। বই উল্টেপাল্টে দেখছেন তরুণ-তরুণীরা। বেঞ্চে বসে কেউ বই পড়ছেন, কেউবা আড্ডায় মেতেছেন। বই নিয়ে ছবি তোলায়ও ব্যস্ত অনেকে।

ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নাদিম হোসেন। কথায় কথায় তিনি ঢাকা টাইমসকে জানালেন, ‘জায়গাটা এখন দেখতে মনোরম। চারিদিকে কোলাহল শর্তেও বইয়ের দু-একটি লাইন নিজের মনে গেঁথে নিয়ে গেলে একরকম উচ্ছ্বাস কাজ করে, যা আমাকে প্রতি শুক্রবারে এখানে টেনে আনে।’

সাম্মি আক্তার ও উর্মি আক্তার নামে দুই বোন ঘুরতে এসেছেন উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে। সাম্মি আক্তার ইডেন মহিলা কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি ঢাকা টাইমসকে জানান, ‘এখানে আসলে ভাল লাগে। সুন্দর সুন্দর ছবি তুলতে পারি। বইগুলো দেখে ভাল লাগে। জায়গাও খুব সুন্দর। পরবর্তীতে পরিবার নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি।’ অন্যদিকে উর্মি আক্তার ইংরেজি সাহিত্যের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

পড়ছেন তেজগাঁও কলেজে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অনেক ভাল লাগলো। সবাইকে এ জায়গার কথা বলবো। আরও বই থাকলে সুন্দর হবে। জায়গাটা আরও বড় করা যেতে পারে। আগে জায়গাটা এমন ছিল না। আর এখন মানুষ এখানে ঘুরতে আসে।’

ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিলন হক এসেছেন বন্ধুদের সাথে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি একটি বই পড়লাম। বইয়ের নাম আগষ্টের একরাত। সেলিনা হোসেনের। এই বইয়ের মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে ১৫ আগষ্টের সেই নির্মম হত্যাকাণ্ড। লাইব্রেরি হলো বিভিন্ন উদ্ভাবনী চিন্তা জন্ম নেওয়ার স্থান। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে ইতিহাস জীবনের সাথে মিশে যায়।’

উন্মুক্ত লাইব্রেরি নিয়ে কথা হয় এটির উদ্যোক্তা তানভীর হাসান সৈকতের সঙ্গে। তিনি ঢাকা টাইমসকে জানান, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ডেভেলপমেন্ট করছেন। পাশাপাশি হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের জন্যেও কাজ করছেন। ব্যক্তিগতভাবেও আমরা হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করার প্রয়োজন অনুভব করছি। আমি মনে করি বই মানুষের মুক্তির হাতিয়ার। একটা সময় লাইব্রেরি সংস্কৃতিটা গ্রাম ও শহরে প্রচলিত ছিল। এটি আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বে পার্ক কিংবা রাস্তার পাশে এ ধরনের লাইব্রেরি আছে। কিন্তু, আমাদের দেশে এটির প্রচলন ঘটেনি। শহুরে ব্যস্ততম জনজীবনে চায়ের আড্ডায় যাতে বই পড়ার সুযোগ থাকে, সেজন্যই উন্মুক্ত লাইব্রেরি।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি শুধুমাত্র বই পড়া না, এটি কালচারাল পরিবেশ তৈরি করবে, যেটি আমাদের লোকজ সংস্কৃতিকে প্রমোট করবে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, জেলা-উপজেলাতে আমি উন্মুক্ত লাইব্রেরি তৈরি করতে কাজ করে যাবো, ইনশাআল্লাহ।’

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা