গুলিতে বিজিবি মারা গেলেও আ.লীগের প্রতিবাদ করার সাহস নেই: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৯

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার উল্লাসেই প্রমাণিত হয়—আপনারা আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলেছেন। বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ।

তিনি বলেন, গত অক্টোবর ২০২৩ সালে ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, ‘আপস হয়ে গেছে। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি'। এই কথার অর্থ দেশের জনগণ নয়, পরগাছা আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব টিকে আছে দিল্লির করুণার ওপর। আওয়ামী লীগের চিরাগত ঐতিহ্যই হচ্ছে নিজ দেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করা। বিএসএফের গুলিতে বিজিবি মারা গেলেও আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ করার সাহস নেই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে বাংলাদেশের নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সীমান্তে বাংলাদেশি এলাকায় নারী—পুরুষ কেউ নিরাপদ নয়। জীবন যাচ্ছে মর্টারের শেলে। বাংলাদেশের চারিদিকে সীমান্ত এলাকায় এখন রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে প্রতিবেশী দেশগুলোর ছোড়া অস্ত্রের আঘাতে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন এবং ভূমি এখন অরক্ষিত। পার্শবর্তী দেশ থেকে দলে দলে লোক এবং অস্ত্র বাংলাদেশে অনুপ্রবিষ্ট হচ্ছে। আর বাংলাদেশ সরকারের অভিসন্ধিপ্রসূত নীরবতা মূলতঃ দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রীর শান্তির বাণী এখন দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রতিদিনই পিছু হটছে আর তাতে বাংলাদেশের মানুষ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। অথচ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত এবং জনগণ ছিল নিরাপদ।

তিনি বলেন, এখানেই বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য। বিএনপির কাছে অবৈধ ক্ষমতা নয় জনগণের স্বার্থই বড়। এ কারণে বিএনপি 'তলে তলে কিংবা প্রকাশ্যে' কোনোভাবেই দেশ এবং জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কারো সঙ্গে আপোস করেনি। আমি আগেও বলেছিলাম, ৭ জানুয়ারী কোনো নির্বাচন ছিল না। ৭ জানুয়ারি ছিল তারেক রহমানের 'লিফলেট বনাম শেখ হাসিনার 'ডামি ব্যালটে'র লড়াই। দেশের শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ শেখ হাসিনার ব্যালট প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩টি রাজনৈতিক দলের 'লিফলেট' গ্রহণ করে ৭ জানুয়ারী ভোট বর্জন করেছিল। সুতরাং, ওবায়দুল কাদের র‌্যাব—পুলিশের পাহারায় থেকে যত কথাই বলুক, আওয়ামী লীগ বরাবরই 'তলে তলে আপস করা' দেশ ও জনস্বার্থ বিরোধী একটি চক্র। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, র‌্যাব—পুলিশের বন্দুকের নল ঘুরে গেলে প্রকাশ্যে তো দূরে থাক, ওবায়দুল কাদেরদের আওয়ামী লীগকে 'তলে তলে'ও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

রিজভী বলেন, রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ তার ছাত্র সংগঠনকে সারাদেশে নারী নির্যাতনের ভয়ংকর দানবরূপে গড়ে তুলেছে। লুটেরা, ভোট—চোর, নারীর শ্লীলতাহরণকারীদের দল আওয়ামী লীগের ক্ষমতালোভের কারণে ছাত্রলীগ নামক দানবদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। কারণ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী শেখ হাসিনার প্রাইভেট বাহিনী হওয়ার জন্যই দলীয় অপরাধীরা নারকীয় অপরাধে মেতে উঠেছে। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও নারীর শ্লীলতাহানিসহ পৈশাচিকভাবে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে শেখ হাসিনার সোনার ছেলে ছাত্রলীগ—যুবলীগের দ্বারা। রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয়ে শুধু নারীর ওপর নিপীড়নই নয়, খুন—অপহরণ—চাঁদাবাজী এমন কোনো অপরাধ বাকি নেই যা তারা করছে না। তাদের ইতিহাসে প্রভাতফেরী থেকে নারীদের উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে নির্যাতিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সারাদেশে কমপক্ষে ২৫৮টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৩১টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৪টি, ২টি ঘটনা যা ধর্ষণের পর ধর্ষিতাকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কেউ নিরাপদ নয়। বর্তমান দুঃসময় সামাজিক নৈরাজ্যের চরম দৃষ্টান্ত। আর এর জন্য দায়ী দখলদার আওয়ামী সরকার।

রিজভী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘৭৫ সালের পর এবারের নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। ইতোমধ্যে ডামি সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অপতথ্য রোধ জরুরী বলে একটি বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যে ডাহা অপতথ্য সেটি রোধ করার ক্ষমতা কি প্রতিমন্ত্রীর আছে? কারণ তথ্য প্রতিমন্ত্রী তো ডামি নির্বাচনের আওয়ামী ডাহা অপতথ্যের প্রোডাক্ট। কারণ অপতথ্য বিতরণ করেই আওয়ামী দখলদার সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে আছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব কতৃর্ক ধিকৃত, নিন্দিত ও দেশের জনগণ কতৃর্ক ভর্ৎসিত ও প্রত্যাখাত নির্বাচনকে শুধুমাত্র ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মোসাহেব’রা ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলেছেন। শতাব্দির শ্রেষ্ঠ তামাশা হচ্ছে ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম,তারিকুল আলম তেনজিং, ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস/০৮ফেব্রুয়ারি/জেবি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

প্রকাশ্যে ভোট: ইসিতে ক্ষমা চেয়ে দায়মুক্তি পেলেন এমপি হাফিজ

সরকারের উৎপাদন করার চেয়ে আমদানি করার চাহিদা বেশি: নজরুল ইসলাম খান

‘ফারাক্কা দিবস’ যেকোনো অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে: মির্জা ফখরুল 

বাংলাদেশকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোল‌নের বিকল্প নেই: দুদু

রিজার্ভ আর অবৈধ সরকারের পতন কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না: এবি পার্টি

ফারাক্কা দিবসের অঙ্গীকার- যৌথ নদী রক্ষায় সোচ্চার হোন: বাংলাদেশ ন্যাপ

অসুস্থ তাঁতীদল নেতা রেজাউল করিমকে দেখতে গেলেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ

শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ছাত্রলীগের কর্মসূচি

জাপাকে বিক্রি করে নেতাকর্মীদের ক্রীতদাস বানানোর চেষ্টা হয়েছে: কাজী মামুন

আ.লীগই ষড়যন্ত্র করে: সালাম

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :