ভালোবাসা দিবসের রক্তাক্ত ইতিহাস সম্পর্কে কতটুকু জানেন?

ভালোবাসা উদযাপন করার যে বিশেষ কোনো দিন থাকতে পারে, এ কথা বিশ্বাস করেন না অনেকেই। আবার, নতুন নতুন ভালোবাসার নাগাল পাওয়া যুগলদের মধ্যে ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকেই যেন চলতে থাকে সপ্তাহব্যাপী উৎসব। এটাকে ভালোবাসার বিশেষ দিনটির প্রস্তুতি পর্বও বলা যেতে পারে।

প্রথম দিন গোলাপ দিয়ে, পরের দিন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে, তৃতীয় দিন চকোলেট আর চতুর্থ দিন টেডি হাতে, পঞ্চম দিন পাশে থাকার অঙ্গীকার করে, ষষ্ঠ দিন একে অপরকে জড়িয়ে, শেষ দিন চুম্বন দিয়ে, শেষমেশ বহু প্রতীক্ষিত ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র দরজায় পৌঁছানোর ঝক্কি কি কম?

ভালোবাসার রং যেহেতু লাল, তাই ভালোবাসা দিবসে লাল রঙের পোশাক, লাল গোলাপ, লাল বেলুন হাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় যুগলদের ভিড়ও জমে। দিন জুড়েই চলে দেদার ঘোরা, বেড়ানো, খাওয়াদাওয়া। ভালোবাসার রঙ লাল হওয়ার নেপথ্যেও রয়েছে রক্তাক্ত এক ইতিহাস। জানেন সেই ইতিহাস?

পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে পোপ গেলাসিয়াস, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলেই জানা যায়, সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের গাথা। রোমের বাসিন্দা, খ্রিষ্টধর্মের পুরোহিত ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই উদ্‌যাপিত হয়েছিল এই দিনটি।

সে দেশে নিষিদ্ধ হওয়া খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য রোমের তৎকালীন সম্রাট রাজা দ্বিতীয় ক্লডিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে কারাগারে বন্দি করার আদেশ দেন। সেখানে আটক থাকাকালীন দৃষ্টিহীন এক মহিলার চিকিৎসা করে চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেন তিনি। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে তার জয়গান। ভ্যালেন্টাইনের এই জনপ্রিয়তায় রাজা ক্লডিয়াস ক্রোধে ফেটে পড়েন এবং তাকে নিশ্চিহ্ন করতে মৃত্যুদণ্ড দেন।

সেই দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। তবে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কোনো দিন ব্যক্তিপ্রেমের কথা প্রচার করেননি। ভালোবাসাকে বেঁধে দেননি নারী-পুরুষের শরীরী ছন্দে। তার প্রচার এবং প্রসার ছিল জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানবপ্রেম নিয়ে।

সেই ভালোবাসাই বিবর্তনের পদচিহ্ন অনুসরণ করে একেবারে ব্যক্তিগত পরিধিতে বাঁধা পড়ে গেছে। নাম হয়ে গেছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। প্রতি বছর এই নামেই দিবসটি পালিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এজে)