সাইবার নিরাপত্তায় ভাড়া করা প্রযুক্তি দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ: তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩৯ | প্রকাশিত : ০৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:৪৭

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দেশের সাইবার নিরাপত্তায় বিদেশ থেকে ভাড়া করা প্রযুক্তি বা সহায়তা নিলে হবে না, আমাদের নিজস্ব শক্তি গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, ‘কোনো দেশ তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন ভাড়া করা সামরিক শক্তি দিয়ে করতে চায় না, তেমনি বাংলাদেশ সাইবার নিরাপত্তা বা সুরক্ষায় ভাড়া করা কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করবে না। দেশের ব্যাংকিং, টেলিকম এবং পাওয়ার সেক্টরে ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে বিদেশ নির্ভর হওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা নিজস্ব সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং প্রযুক্তির নতুন টুল তৈরিতে কাজ করছি।’

মঙ্গলবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দেশের মানুষকে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন করতে এবং ভবিষ্যতের জন্য আরও প্রস্তুত হতে ‘বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি সামিট-২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হয়।

লিঙ্ক৩ টেকনোলজিস লিমিটেড এবং আইডিয়া ফাউন্ডেশন এর সঞ্চালনায়, বিকাশ লিমিটেডের সম্পৃক্ততায় এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই সামিটটির আয়োজক হিসেবে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।

দিনব্যাপী সামিটে উপস্থিত ছিলেন দেশের ব্যবসায়, উন্নয়ন, প্রযুক্তি, ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স খাতের দেশের শীর্ষ সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা সহ পলিসি বিশেষজ্ঞ এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহী দেশ-বিদেশের আরও অনেকে।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, পৃথিবীর কেউ বলতে পারবে না সাইবার সুরক্ষায় শতভাগ নিরাপদ। তবে আমরা সক্ষমতা, দক্ষতা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছি। তিনি বলেন, সম্প্রতি তথ্য-উপাত্ত চুরি করার জন্য বড় ধরনের আক্রমণ হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে অর্থের পাশাপাশি তথ্য-উপাত্ত মূল্যবান হয়ে উঠছে। এখন আমাদের তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষায় আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। এ কারণে আমরা পার্সোনাল ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট আইন প্রণয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে সাইবার সুরক্ষায় নাগরিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, প্রযুক্তির উন্নয়ন, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক সমন্বয়, এ চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্র দাবি করতে পারবে না তারা শতভাগ সাইবার নিরাপদ। সাইবার জগৎটাকে নিরাপদ রাখতে এবং সাইবার হামলা মোকাবেলায় সবাইকে একসাথে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক সমন্বয় বেশি প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সাইবার হামলার স্বীকার হয়েছিল সেটা কিন্তু একটা দেশ থেকে সাইবার অপরাধীরা আক্রমণ করেনি। বাংলাদেশ থেকে অর্থ চুরি করে অন্য একটা দেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের আর কোনো বড় ক্ষতির সম্মুখীন যাতে না হতে হয়, সেজন্য প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (ক্রিটিকাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার) প্রতিষ্ঠানকে আমরা গাইডলাইন দিয়েছি এবং তাদের প্রযুক্তিগত কী সক্ষমতা প্রয়োজন সেটার প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি ভারত, আমেরিকা, জাপান ও কোরিয়ার সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি যাতে কোনো ধরনের সাইবার নিরাপত্তায় হুমকি বা ঝুঁকির তথ্য-উপাত্ত তারা পেলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে, আমরা পেলে তাদের সাথে শেয়ার করি। আমরা আন্তর্জাতিক কিছু সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করেছি। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কারণ অর্থনৈতিকভাবে আমরা যতটুকু সমৃদ্ধি হবো, স্মার্ট বাংলাদেশের যত ডিজিটাল সার্ভিস জনগণকে দেবো, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যতো ক্যাশলেস হবে, তত বেশি আমাদের সাইবার ঝুঁকিও বাড়তে থাকবে।

পলক বলেন, এ সাইবার সামিটের মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট তাদের কাছ থেকে বর্তমানের ঝুঁকিগুলো বুঝা, ভবিষ্যত করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সরকারি-বেসরকারি খাত ও শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে একটা সহযোগিতা সৃষ্টি করা হবে। ভবিষ্যতে সচেতনতা বৃদ্ধি বা বিদেশি প্রযুক্তি শুধু বাংলাদেশে আনাই নয়, আগামী দিনে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে স্টার্টআপদের যে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা আছে সেটা তৈরি করা।

পলক বলেন প্রতি বছর, ‘বাংলাদেশ সাইবার সামিট’ আয়োজন করা হবে। আগামী বছর থেকে আমাদের স্থানীয় সাইবার সিকিউরিটি স্টার্টআপ, ইনোভেটর এবং লোকাল যে প্রযুক্তিগুলোর ডেভেলপ করার সুযোগ আছে সেখানে সরকার ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়াকে সহযোগিতার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বনির্ভরতা অর্জন করতে চায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আইডিয়া ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান, স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের কো-চেয়ারম্যান, সাবেক মুখ্য সচিব, সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চিফ ইনফরমেশন টেকনোলজি অফিসার ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিক্যাফ) উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হুসাইন এ সামাদ ও টেকনো হ্যাভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম।

(ঢাকাটাইমস/০৫মার্চ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

কাদের সাহেবরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে: রিজভী

যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে তাকাতে চায়, পেছনে নয়: ডোনাল্ড লু

অর্থমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা সড়কে দুর্ঘটনা কমাবে: রোড সেফটি কোয়ালিশন

মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ ‘অভাবনীয়’ উন্নতি করেছে: ইউএনএফপিএ

উদ্ভাবনে উপকৃত হবেন কৃষকরা, উৎপাদন বাড়বে ফসলের: কৃষিমন্ত্রী 

সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে লু’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: পরিবেশমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র: লু

সারাদেশে ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ নীতি কার্যকরের নির্দেশ

প্রবাসীদের এনআইডি কার্যক্রম দেখতে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন ইসি আলমগীর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :