আজ শেষ হচ্ছে তাড়াশের বউ মেলা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারের উদ্যোগে প্রতি বছর চৈত্র্য মাসের প্রথম দিন আয়োজন করা হয় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা। মেলা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর এই তিন জেলার মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় নওগাঁ গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে বসা বউ মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় শত শত বউ-শাশুড়ি উৎসবের আমেজে দিনভর কেনাকাটা করেন এ মেলায়।
আজ রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে শেষ হচ্ছে এ মেলা।
এর আগে শনিবার (১৬ মার্চ) বিকাল থেকে তাড়াশ উপজেলায় শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে এ বউ মেলা শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর (রহ.) আধ্যাত্মিক গুরু নওগাঁর হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক উরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুরসহ তিন জেলার শতশত নারীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে মেলা। বিশেষ করে একদিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন।
মেলার বিশেষ আকর্ষণ কাঠ, বাঁশ ও বেতসহ স্টিলের আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালি জিনিসপত্র। তবে মৃৎপাত্র, প্রসাধনী সামগ্রী, মিঠাই-মিষ্টান্নসহ সব কিছু পাওয়া যায় এ মেলায়। বউ মেলাকে ঘিরে এলাকার ঘরে ঘরে জামাই-ঝিকে নাইওরে আনা হয়। ফলে এলাকায় নারীদের মাঝে ওরস উপলক্ষে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
মেলায় আগত নববধূ রুমা, গৃহবধূ স্বর্ণালী, বৃদ্ধা রমিছা বেগমসহ আরো অনেকেই জানান, বছর জুড়ে আমাদের তেমন একটা বাড়ির বাইরে আসা হয় না। মেলাকে উপলক্ষ্য করে অনেক পুরোনো সইদের সঙ্গে দেখা হয়। কথা হয়েছে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে। মেলায় আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনে থাকি। তাই প্রতিবছর আমরা এই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি।
কিশোরী রোজিনা খাতুন, মিতু সরকার, বন্যা খাতুন, সাবিনা পারভিন, সেতু রানি কিনেছেন নেইল পলিস, মাথার ব্যান্ড, কাঁচের চুড়ি। ছোট ভাই-বোনের জন্য কিনেছেন বাঁশি, বেলুন, পটকা এবং মুখরোচক সব খাবার। পড়ালেখার চাপ আর সংসারে কাজ থাকলেও সারা বছর অপেক্ষা শেষে মেলায় ছুটে আসেন বলে জানান তারা।
শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারের মোতাওয়াল্লি আব্দুল হাই সরকার বলেন, ভারতের আজমীর শরীফের পীর খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর (রহ.) আধ্যাত্মিক হাজী শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ.) মাজারে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক উরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে শেষের দিন শনিবার থেকে ওই ঐতিহ্যবাহী বউ মেলার আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার নারীদের উপস্থিতিতে মেলার স্থল সরগরম হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দুই দিনের জন্য বউ-শাশুড়িরা কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। এতে ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা এলাকায় বউ-শাশুড়ির মিলনমেলায় পরিণত হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৭মার্চ/প্রতিনিধি/ পিএস)
মন্তব্য করুন