কোম্পানীগঞ্জে পর্যটকদের মারধরের অভিযোগ সহকারী পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের পর্যটন কেন্দ্র রেগুলেটর এলাকায় পর্যটকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ফেনীর সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইনের বিরুদ্ধে। তার মারধরে আহত হয়েছেন আলী আজগর (৩৬), তার ভাই পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক (৩১) ও আজগরের স্ত্রীসহ (২৭) বেশ কয়েকজন। আলী আজগরের খারাপ আচরণের কারণে ও ভুল বুঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশ সুপারের।
সোমবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের কিছু ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এর আগে গত শুক্রবার (ঈদের পরদিন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুছাপুর রেগুলেটর সড়কে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহতরা সবাই নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আলী আজগর অভিযোগ করে বলেন, ঈদে নিজের স্ত্রী, দুই সন্তান, ভাই ওমর ফারুক ও তার কয়েকজন বন্ধু নিয়ে মুছাপুর ক্লোজারে ঘুরতে যান আজগর। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘুরা শেষে নিজের এলাকায় মোটরসাইকেলযোগে ফিরছিলেন তিনি। ওই মোটরসাইকেলে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিল। কিছু পথ আসার পর বিপরীত দিক থেকে একটি পুলিশের গাড়ি আসে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে সড়কটির দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে একজন (সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইন) লাঠি নিয়ে নেমে আসেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমেই লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এ সময় আমি (আজগর) ওনাকে গালাগালি করতে নিষেধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কলার ধরে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। আমাকে বাঁচাতে আমার স্ত্রী ও পুলিশ কনস্টেবল ভাই ওমর ফারুক এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করেন তিনি। একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা তার ৫-৬ জন পুরুষ আত্মীয় একত্রিত হয়ে আমাদের সবাইকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয় এবং আমার ভাইয়ের হাত মচকে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করলে আমরা চলে আসি এবং কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সেখানে একদিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে যায়। একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক সাধারণ মানুষের প্রতি এমন নির্মমতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিবেন বলেও জানান আজগর।
বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি দাবি করে সহকারী পুলিশ সুপার তসলিম হুসাইন বলেন, ‘ওইদিন আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুছাপুরে ঘুরতে আসি। সড়কের জ্যাম থাকায় আমি প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করি। এসময় সড়কের উল্টো পাশে একটি মোটরসাইকেলে নিজের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আজগর। আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে সরতে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে আমার ভাইসহ অন্যরা নেমে আসে এবং আজগরের ভাই ফারুক আমাকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিলে আমরা কথা বলি। একপর্যায়ে আজগর আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি ঘুসি মারতে শুরু করলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আমি ও ওমর ফারুক এগিয়ে গিয়ে তাদের শান্ত করি।’
তবে তিনি কাউকে মারেননি বলে দাবি করেন সহকারী পুলিশ সুপার। বিষয়টি তাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফেনী পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন জানান, এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫এপ্রিল/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন