দেশে ফিরলেন ভারতে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশি

অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতে আটকে পড়া ১৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। মঙ্গলবার সকালে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তারা দেশে প্রবেশ করে। তাদের বেশির ভাগ সীমান্তের ওপারে মেলা দেখতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। ভারতের আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামের দুলাল নাথের ছেলে রুবেল কুমার নাথ, উত্তর গুজরা গ্রামের মিলন বিশ্বাসের ছেলে রাজিব বিশ্বাস, সুলতানপুর গ্রামের মিলন দের ছেলে শঙকর দে, একই গ্রামের বিষু দাসের ছেলে জয় দাস, কাজল দাসের ছেলে সঞ্জয় দাস, অনিল দাসের ছেলে উল্লাস দাস, সুকুমার চৌধুরী দাসের ছেলে দীপক দাস গুপ্তা, মন্টু রাম ঘোষের ছেলে রুমন ঘোষ, যোগেশ ঘোষের ছেলে রুবেল ঘোষ, রনধীর দাসের ছেলে প্রান্ত দাস, একই জেলার হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম দেওয়ান নগরের মো. হোসেনের মেয়ে নাহিদা শেখ ও তার দুই শিশু সন্তান ফয়েজ ইসলাম শেখ এবং ফাইজা শেখ।
আখাউড়া চেকপোস্ট সীমান্তের শূন্যরেখায় দেশে ফেরত আসা দীপক দাস গুপ্তা বলেন, আমরা ১০ জন খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতের ডংরু মেলায় ঘুরতে যাই। মেলা দেখে ওখান থেকে আগরতলায় একটি মন্দির দেখে ফেরার পথে আমাদের বহনকারী ভারতীয় গাড়িটির চালক আমাদেরকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের পরিবর্তে স্থানীয় একটি থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ আমাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত আমাদেরকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে এক মাসের সাজা দেয়। কারাভোগ শেষে আমরা একটি হোমে ছিলাম। সেখান থেকে ৪ মাস পর বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আমরা আজ দেশে ফিরলাম।
দেশে ফেরত আসা নাহিদা শেখ বলেন, আমি, আমার স্বামী ও এক সন্তানসহ গত তিন বছর আগে স্বামীর চিকিৎসার জন্য অবৈধ পথে ভারতের মুম্বাই শহরে যাই। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়ে ১ বছর কারাভোগ শেষে যখন হোমে ছিলাম তখন আমার আরেকটি সন্তান জন্ম হয়। গত ৬ মাস আগে ওখানে আমার স্বামীর মৃত্যু হলে সেখানেই দাফন-কাফন হয়। দীর্ঘ ৩ বছর পর আমি আমার ২ সন্তানসহ আজ দেশে ফিরেছি।
আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা ওমর শরীফ বলেন, ১৩ জন বাংলাদেশিকে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করেছি। তাদের মধ্যে ১ নারী ও দুজন শিশুসহ ১৩ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন এসেছিলেন মেলা দেখতে ও আরেক পরিবার এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। তারা দেশে ফেরার পথে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে সাজাভোগ করেন। বিষয়টি বাংলাদেশ হাইকমিশন জানতে পেরে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদেরকে আজকে দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম, বিএসএফের ১২০ কোম্পানি কমান্ডার বিবেক ধীমান, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, ৬০ বিজিবি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার শাহ আলম প্রমুখ।
(ঢাকা টাইমস/২৩এপ্রিল/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন