শতকোটি ব্যয়ে রংপুরে হচ্ছে ৪৬০ বেডের ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ হাসপাতাল

রেজাউল ইসলাম বাবু, রংপুর
 | প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:২৮

রংপুর বিভাগের আট জেলার দুই কোটি মানুষের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ৪৬০ বেডের অত্যাধুনিক ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগ হাসপাতাল।

দুটি বেজমেন্টসহ ১৭ তলার হাসপাতাল ভবনটির ৬০ শতাংশ নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এই হাসপাতালটি থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, স্বাস্থ্য খাতে পিছিয়ে থাকা রংপুর অঞ্চলের মানুষের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার ২০২১ সালের মে মাসে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে প্রায় দুই একর জমির উপর ৪৬০ বেডের হাসপাতাটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালটির ১০ তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

১৭ তলা হাসপাতালটির দ্বিতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত থাকবে ১৮০ বেডের ক্যানসার বিভাগ, ৮ থেকে ১১ তলা পর্যন্ত থাকবে ১৬৫ বেডের কিডনি বিভাগ ও ১২ থেকে ১৫ তলা পর্যন্ত থাকবে হৃদরোগ বিভাগ।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হাসপাতালটির আয়তন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৩১২ বর্গফুট। এতে থাকবে অত্যাধুনিক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, স্টোর রুম, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, পাঁচতলা বিশিষ্ট আনছার ব্যারাকসহ আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। এছাড়া উঠা-নামার জন্য নয়টি লিফট ও চার তলা পর্যন্ত এক্সলেটর সুবিধা পাবেন রোগীরা।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরাহীম গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তামানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমিত আকারে ক্যানসারের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। আধুনিক এই হাসপাতালটি চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষের হয়রানি কিছুটা কমবে। সেই সঙ্গে অর্থের খরচ কমে আসবে।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুন্নবী লাইজু জানান, ‘রংপুর অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের ভরসা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই বিশেষায়িত হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা চালু হলে অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষজন কিডনি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস সুবিধা, ক্যানসার রোগীদের কেমোথ্যারাপি, রেডিও থ্যারাপি এবং রক্ত রোগের সকল চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হবে। এটা বর্তমান সরকারের জন্য বড় ধরনের মাইলফলক এবং এ অঞ্চলের চিকিৎসা সেবার জন্য আশীর্বাদ।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান মাহফুজার রহমান জানান, ‘এই হাসপাতালটি হবে এই অঞ্চলের রোগীদের জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। সারা বিশ্বেই এখন ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব। এদিক থেকে পিছিয়ে নেই রংপুরের আট জেলার মানুষ।’

তিনি জানান, এই অঞ্চলে ক্যানসার, কিডনি ও হৃদরোগীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল না থাকায় সবসময় রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাসহ দেশের বাইরে পাঠানো হতো। এতে করে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারতো নিম্নআয়ের মানুষ। হাসপাতালটি চালু হলে হাতের কাছেই পৌঁছে যাবে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা। হাসপাতালটি হবে এ অঞ্চলের মানুষের আশীর্বাদ।’

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বর্তমানে পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী) মো. সাকিউজ্জামান জানান, পূর্বের ডিপিপির চেয়ে ভবনটির ৫৭ হাজার স্কোর ফিট বৃদ্ধি পাওয়ায় ও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিপিপি সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় আরও ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে।’

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেওয়ান মাউদুদুর রহমান জানান, ২০২১ সালের মে মাসে হাসপাতাল ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে দশম তলার নির্মাণ কাজ চলছে। আশা করছি ২০২৫ সালের মধ্যে হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। অত্যাধুনিক এই হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা চালু হলে এই অঞ্চলের স্বাস্থখাতে বিপ্লব ঘটবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :