অবন্তিকার আত্মহত্যা: এখনো মেলেনি তদন্ত প্রতিবেদন, থমকে গেছে আন্দোলন

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার দেড় মাস পেরিয়েছে।
এ ঘটনায় প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে নামে। আত্মহত্যার ৫০ দিন পর এই আন্দোলন এখন নেই বললেই চলে।
অবন্তিকার আত্মহত্যার পর ‘প্রশাসনের গদিতে আগুন জালাও একসাথে’, ‘অবন্তিকা মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, এমন স্লোগানের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলনের মাত্রা বেগবান করা হয়। পরের দুইদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আন্দোলন না হয়ে তার দুইদিন পর আবারও আন্দোলনে মুখরিত থাকে ক্যাম্পাস। ঈদের ছুটির পর থেকেই থেমে যায় আন্দোলন।
আন্দোলন থেমে আছে কেন— এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারী ইভান তাহসীব বলেন, ‘আমরা জানি এর কোনো ফলাফল আসবে না। কিন্তু সক্রিয়তার একটা বিষয় আছে। আমরা প্রশাসনকে ভাবার এক পথ খুলে দিয়েছি। এখন আন্দোলনকারী বিভিন্ন শিক্ষার্থী ক্লাস, মিড, সেমিস্টার নিয়ে ব্যস্ত।’
আরেক শিক্ষার্থী মুজাহিদ বাপ্পি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদীর্ঘ বিচারহীনতার সংস্কৃতির সর্বশেষ সংযোজন হলো ফাইরুজ অবন্তিকা। এখানে বরাবরই কোনো ঘটনা ঘটলে প্রশাসন থেকে ত্বরিত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আন্দোলনের মেরিট নষ্ট করা হয়। এক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।’
বাপ্পি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শিক্ষার্থীদের নিয়েই। দীর্ঘসময় ঈদ এবং দাবদাহে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাসে আন্দোলন মোবিলাইজ করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন পর আজ ক্যাম্পাস খুলেছে, শিগগিরই সাংগঠনিকভাবে এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জোরালো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
উপাচার্যের আশ্বাস ছিল সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত কমিটি বলছে প্রতিবেদন কবে জমা দিতে হবে তার স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা তাদের দেওয়া হয়নি। পঞ্চাশ দিনের মধ্যেও তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারছে না। পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার ফলে তদন্তের কাজে দেরি হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেছি। অনেক সভাও করেছি। তবে ঘটনাস্থল কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য অবন্তিকার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের রেকর্ডসহ বিভিন্ন তথ্য বারবার চেয়েও না পাওয়ায় তদন্তের কাজ এখনো শেষ করতে পারিনি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার বাগিচাগাঁও নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেন। এ ঘটনার পরপরই মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
(ঢাকাটাইমস/০৬মে/এসএইচ/এসআইএস)

মন্তব্য করুন