কবিতা
রবি’র ছবি
আমার ঘরের দীর্ণ দেয়াল ধন্য করা
সৌম্য ছবি
গভীর ধ্যানে মগ্ন যেনো
দীপ্যমান এক ঋদ্ধ ঋষি।
কিংবা কেনো বাউরা বাউল
একতারাটার সুর সাগরে
ভাসায় ভাবের সাধন ভেলা
নিরুদ্দেশে,
রঙের বাড়ই মনের মানুষ
কিংবা সাঁইয়ের অচিন দেশে।
নীরবতা ফোটায় যেমন বাঙ্ময়তা
কোনোই কথা না-বলে সে
বলতে থাকে অনেক কথা।
পুঞ্জপাতার নীরবতা ভংগ ক’রে
কয় যে-কথা জ্যোৎস্না রাতে হাস্নাহেনা
জাম-জারুল আর তাল-তমালের শ্যামল বনে
হাওয়ার তালে করতালি যায় যে শোনা।
বাণির বীণা সুরের ধারা কাব্য-গাথা
বৃষ্টি ভেজা সবুজ পাতা।
ধানের ক্ষেতে রোদ্রছায়া
তোমায় ছোঁয়া রূপ মাধুরি যায় যে চেনা।
বটের ছায়ায় রাখাল ছেলে
বাঁজায় শ্যামের বাঁশের বাঁশি,
দশদিশিতে ছড়ায় তোমার
আকুল-উদাস সুরের রাশি।
ছোট্ট প্রাণের দুঃখ-কথার করুণ ছবি
তোমার রঙে আঁকছে নিতুই
রতন-ফটিক।
হতচ্ছাড়া কেষ্টা বেটা
ভূ-বঞ্চিত নি:স্ব উপেন
অপর্ণা বা তপতীরা
ফেলছে তোমার কাতর কথার বিষাদ ছায়া।
তোমার তুলির আঁচড় লেগে অবলীলায়
তপস্বিনী মূর্ত হলো চিত্রকলায়।
মদন-অলীক বাবুর বেশে সংলাপে হও
মঞ্চে মুখর
নটরাজের যোগ্যসাজে।
ভাবনা তোমার কথার পাখি
প্রজাপতির চঞ্চলতায় ভাবসুষমা নির্জনতায়
সীমার বাঁধন ছিন্ন করে মেলছে ডানা
রূপ-অসীমের যার ঠিকানা।
নান্দনিকের স্বর্গ হতে
ফিরলে ঝরা পাতার দলে
মর্ত্যটাকে স্বর্গ জেনে
মাটির টানে মায়ের কোলে।
ছবিতো নয় কেবল ছবি
সিদ্ধ পুরুষ সব্যসাচী বিশ্বকবি
যুগপ্রভাতের দীপ্ত রবি
নীরব, তবু ছন্দ সুরে
অরূপ রূপে বলছে সবি।