ভোগান্তির নাম চবির শাটল ট্রেন

চবি প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ মে ২০২৪, ১৬:৩৯
অ- অ+

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র শাটল ট্রেনের ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। শাটল ট্রেনে যাত্রা যেমন স্বপ্নের, তেমনি ভোগান্তিরও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হাজারও শিক্ষার্থীর আবেগ, ভালোবাস, অনুভূতি আর হতাশার নাম এই শাটল ট্রেন।

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই ট্রেন। প্রায় ১০-১৫ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত শাটলে যাতায়াত করেন। বর্তমানে দুটি শাটল মোট ১৪ বার শহর-ক্যাম্পাস-শহর আসা যাওয়া করে। প্রতিটি শাটলে দশটি করে বগি আছে।

প্রতি বছর জ্যামিতিক হারে শিক্ষার্থী বাড়লেও বাড়েনি শাটলের শিডিউল বরং লোকবলের সংকট দেখিয়ে করোনার পর বন্ধ করে দেওয়া হয় নিয়মিত শিডিউলের ডেমু ট্রেন। পুরো ট্রেনে নেই কোনো সচল ফ্যান। কিছু বগিতে ফ্যান থাকলেও কখনো চালাতে দেখা যায়নি। ফলে ভিড় এবং গরমে ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।

সম্প্রতি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, গরমে ট্রেনের বৈদ্যুতিক পাখা চালানোর জন্য শাটল ট্রেনে ‘পাওয়ার কার’ যুক্ত করার আশ্বাস মিলেছে। তবে নতুন ট্রেনের ব্যবস্থা করা, ট্রেনে বগির সংখ্যা বাড়ানো, ট্রেনের শিডিউল বাড়ানো, ডেমু ট্রেন আবার চালু করা এসবের আশ্বাস এখনও বহুদূর।

শিক্ষার্থীরা জানান, এমনিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শাটল সংখ্যা অপ্রতুল। এর মধ্যে তিন জোড়া শাটল ও দুই জোড়া ডেমু বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। শাটলে সিট খালি তো দূরের কথা তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত নেই। বাধ্য হয়ে অনেককে ঝুঁকি নিয়ে শাটলের ছাদে উঠতে হচ্ছে।

চবির ফিলোসোফি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোনেম শাহরিয়ার শাওন ঢাকা টাইমসকে বলেন, শাটল যেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের দোজখের ওম। সব বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা ৯:৩০ থেকে ১০ টার মধ্যে শুরু হওয়ায় ৮:২০ এর ট্রেনে করে সবাইকে একসঙ্গে যেতে হয়। তার মধ্য আবার বগি কম। এতে অধিক গরমে আমরা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি।

চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুকনুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পারে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোনো আগ্রহ আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে, ট্রেনের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রেলওয়ের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) সঙ্গে আলোচনা করেছে চবি কর্তৃপক্ষ। শাটলে পাওয়ার কার যুক্ত করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম। তবে পাওয়ার কার বসাতে একটু সময় লাগবে। মাস দু-একের মধ্যে একটি ট্রেনে পাওয়ার কার যুক্ত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী (পূর্ব) মো. হাবিবুর রহমানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা লাইট ফ্যানগুলো চালু করার চেষ্টা করছি, দেখি কবে চালু করা যায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের একটা লিমিটেশন আছে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে আমরা চেষ্টা করছি। নব নিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের আশার বাণী দেখাচ্ছে এই যন্ত্রণার ইতি ঘটার। আশা করি প্রশাসন অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের যন্ত্রণার কথা ভেবে শাটল ট্রেনের বগি বৃদ্ধি করবে, ট্রেনের ভেতরে পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা করবে, ডেমু ট্রেনের মতো নতুন ট্রেনও বাড়াবে।

(ঢাকাটাইমস/২১মে/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কুষ্টিয়ায় জাসদ কর্মী হত‌্যার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩
চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির আলোচনা সভা চলছে
নরসিংদীতে ৮ মামলার আসামিকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
কলরেকর্ড ফাঁসের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন বরখাস্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা