পশ্চিমবঙ্গে নিখোঁজ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ উদ্ধার

ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৪ মে নিখোঁজ হন। তার ফোনও বন্ধ ছিল। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট আজ সকালে একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে এ খবর দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিউটাউনের এক অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে এ সংসদ সদস্যের মরদেহ মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার। সাত দিনেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন এই সংসদ সদস্য। গত ১৮ মে এই বিষয়ে কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরাহনগর থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেন আজীমের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করা গোপাল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই এ বিষয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে টিম গঠন করে তদন্ত শুরু করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। গোটা বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে নজরদারি চালায় কলকাতাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
জানা গেছে, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে আনোয়ারুল আজীম পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে বরাহনগর থানা এলাকার মণ্ডলপাড়া লেনের গোপাল বিশ্বাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে উঠেন। গেদে সীমান্ত হয়ে গত ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৌঁছান ওই পরিচিতের বাড়িতে। পরের দিন ডাক্তার দেখাতে বেরিয়ে যান ওই পরিচিতের বাড়ি থেকে। শেষবার বরাহনগর বিধানপার্ক এলাকার কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে তাকে গাড়িতেও উঠতে দেখা যায়।
তবে নিউটাউন সঞ্জীবা গার্ডেনে কবে গেছেন, তিনি সেখানে অবস্থান করতে গিয়েছিলেন কি না- এসব নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে।
কোনো স্বর্ণ পাচারকারী চক্র জড়িত কি না সেই বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মো. আনোয়ারুল আজীম আনারের জন্ম ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি। পেশায় ব্যবসায়ী আনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে তিনবার (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) নির্বাচিত সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং এক সময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়াড়। ছাত্রজীবনে আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফুটবলে তার নেতৃত্বাধীন দল কালীগঞ্জ সরকারি ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
তিনি ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। স্থানীয় পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচন দিয়ে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। এর আগে বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও তিনি জয়ের ব্যবধান দিয়ে জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।
(ঢাকাটাইমস/২২মে/এসএস/এলএম/এফএ)

মন্তব্য করুন