১১ দফা দাবি বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ মে ২০২৪, ১৬:০৭

১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।

বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, নদী মাতৃক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নৌপরিবহন শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রায় শত ভাগ ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত এই শিল্প স্বল্প ব্যয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রটোকল রুটসহ বহিঃবিশ্বের সাথে আমদানি ও রফতানি পণ্য পরিবহন অনেকাংশেই নৌপরিবহনের উপর নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও নৌযান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময় উপেক্ষিত থেকেছে। আমরা সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে ও সংগ্রাম করে আসছি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে দাবি মেনে নিয়ে কিছু কিছু কার্যকর করলেও অধিকাংশ সিদ্ধান্তই অকার্যকর অবস্থায় উপেক্ষিত থেকে যায় বছরের পর বছর।

তিনি বলেন, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্ট্রিবিউটারি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন এবং প্রত্যেক শ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র-সার্ভিসবুক প্রদানের দাবি মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ত্রিপক্ষীয় সভায় সর্বসম্মতভাবে মেনে নেওয়ার ৪ বছর অতিবাহিত হলেও এখন অবধি তা বাস্তবতার মুখ দেখেনি। দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকার যৌক্তিক দাবির বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। মালিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং এক শ্রেণির অতি মুনাফা লোভী অসৎ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে পণ্য পরিবহনের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যাওয়ায় এ শিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।

আশিকুল আলম বলেন, শ্রমিকের জীবিকা ও শিল্পের প্রয়োজনে অচিরেই সকল মালিক সমিতিকে এক প্লাটফর্মে এনে এককেন্দ্রিক সিরিয়ালের মাধ্যমে পণ্যপরিবহনে সমতা বিধান করা না গেলে চট্টগ্রাম থেকে পণ্যপরিবহনে নিয়োজিত প্রায় ২ হাজার জাহাজের অর্ধেক জাহাজ লোকসানের বোঝা বহন করতে না পেরে বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ হাজার হাজার নৌশ্রমিক বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক যাত্রীবাহী লঞ্চ বন্ধ হয়ে কয়েক হাজার বেকার হয়ে পড়া শ্রমিকের সাথে যুক্ত হয়ে বেকার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে। পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী জাহাজের অনেক মালিক নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে পারছে না। ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে নতুন-মজুরি কাঠামো কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পণ্য পরিবহনে সমতা না থাকায় বিশেষ সুবিধাভোগী মালিক সম্প্রদায়ের মালিকরা গেজেট অনুযায়ী মজুরি প্রদান করলেও এখনো ৪০ শতাংশের বেশি শ্রমিক গেজেট মোতাবেক বেতন না পেয়ে চরম অর্থ সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।

তিনি বলেন, পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইতিপূর্বে আমরা গত ২ ও ২৫ জানুয়ারি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বরাবর ২ টি চিঠি পাঠাই। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় নৌপরিহন অধিদপ্তর পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে সেটা থমকে গেছে। অতিদ্রুত পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হল আসন্ন ঈদ-উল-আযহার বেতন বোনাস না পাওয়াসহ চাকরি রক্ষার বিষয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে নৌ শ্রমিকরা।

তিনি আরও বলেন, এসব সমস্যার সমাধানে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ১১ দফা দাবি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করা হলেও এখন অবধি তার কোনো অগ্রগতি হয় নি।তবে আগামী ৩০ মে আমাদের দাবি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রনালয় সভা আহ্বান করা হয়েছে। এরপরেও দাবি বাস্তবায়িত না হলে আমরা কর্ম বিরতির কর্মসূচি শুরু করতে বাধ্য হবো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো শাহ আলম, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল্লা বাহার, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি আজিজুল হক প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/এমআই/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :