শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাত সকাল ৯টায়

অন্যান্য বারের মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে। ঈদুল আজহার জামায়াত নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার ঈদের দিন সকাল ৯টায় শুরু হবে জামাত। এরই মধ্যে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ও ঈদগাহ কমিটির তৎপরতায় নামাজের উপযোগী হয়ে উঠেছে শোলাকিয়া ঈদগাহ মায়দান।
ঐতিহ্যবাহী এই মাঠে তিন লাখেরও বেশি মুসল্লি এক সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। রেওয়াজ রয়েছে জামাত শুরুর আগে বন্দুকের গুলির শব্দে নামাজের প্রস্তুতির সংকেত পাওয়া যায়।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শোলাকিয়া মাঠকে নামাজের প্রস্তুতি করার জন্য দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়াল রং করার মধ্য দিয়ে কাজ শেষ হয়েছে। ওজুখানা ও টয়লেট সংস্কার করা হয়েছে। এখন চলছে শোভাবর্ধনের কাজ। মুসল্লিদের জন্য রাখা হয়েছে সুপেয় পানি, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা সহ নানা আয়োজন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম।
এদিকে দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেন দুটি মুসল্লি নিয়ে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে এসে নামাজ শেষে আবার ফিরে যাবে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জামাতের মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জামাত অনুষ্ঠিত হবে। যেন মুসল্লিরা নিরাপদে জামাতে এসে নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারেন। জামাতে শুধু টুপি, মাস্ক ও জায়নামাজ ছাড়া কিছুই বহন করা যাবে না।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে এবারও অন্যান্য বারের চেয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠসহ আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নামাজের সময় ২ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। আর আকাশে উড়বে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা। এর ফলে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
জানা যায়, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়রত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশ নেন বলে মাঠের নাম হয় “সোয়া লাখি মাঠ”। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে নাম হয়েছে আজকের শোলাকিয়া মাঠে। মাঠে একসঙ্গে দুই লাখেরও বেশি মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে নামাজের ২৬৫টি কাতার রয়েছে। এবার এ মাঠে ১৯৭তম ঈদের জামাত হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এমএইচ)

মন্তব্য করুন