পুদিনা পাতা কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৪, ০৮:৪৩

পুদিনা অতি পরিচিত একটি নাম। পুদিনা বা মিন্ট, যেটি মেন্থ নামেও পরিচিত, এটি লামিয়াসিয়ার পরিবারগুলোর উদ্ভিদের বংশধর। বিশেষ এক প্রকারের হার্ব বা ছোট গাছ হল 'মিন্ট'। পুদিনা এক প্রকারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। কান্ড ও পাতা বেশ নরম। কান্ড বেগুনি রঙের। এই গাছের পাতা ডিম্বাকার, রোমশ, কিনারা খাঁজকাটা ও মিন্টের তীব্র গন্ধযুক্ত হয়। প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে পুদিনা বা মিন্ট ব্যবহার হয়ে আসছে। সাধরণত, এই ধরনের গাছগুলো ঠান্ডা একটি অনুভূতির সৃষ্টি করে। খুব সহজেই মাটিতে বা টবে পুদিনার চাষ করা যায়।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে এই পাতা বহু রোগ সারানোর কাজে লাগে। তরকারিতে সুগন্ধি হিসাবে একে ব্যবহার করা হয়। গরমকালে পুদিনা পাতার সরবত খাওয়ারও প্রচলন আছে। বিভিন্ন খাবার এবং পানীয়ে পুদিনা পাতার ব্যবহার বেশ প্রচলিত। চা থেকে শুরু করে নানা সস, সালাদ, ডেজার্ট, অনেকক্ষেত্রেই পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়ে থাকে।

পুদিনা পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। পুদিনা জীবাণুনাশক হিসাবে কাজ করে। কাশি, অরুচি ও পাকস্থলীর প্রদাহে পুদিনা উপকারী। পুদিনা পাতার চা বেশ জনপ্রিয় পানীয়। এছাড়া পুদিনা পাতা রুপচর্চায়ও ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন প্রসাধনি এবং খাবারে বাড়তি রিফ্রেশমেন্ট তৈরি করে পুদিনা পাতা। এর গুণাগুণও অনেক। ক্যালোরি কম থাকে। প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে স্বল্পমাত্রায়।

শুধু তাই নয়, পুদিনায় ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স থাকে অধিক মাত্রায়। যা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে। সহায়তা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে।

পুদিনায় থাকে প্রচুর আয়রন, পটাসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। যা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ব্রেনের কার্যকারিতা শক্তি বৃদ্ধি করে। বদহজম থেকে মস্তিষ্কের বিকাশ, অনেক ক্ষেত্রেই সাহায্য করে পুদিনা বা 'মিন্ট'।

পুদিনায় রয়েছে মনোটারপিন নামক উপাদান। এটি স্তন, লিভার, অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত পুদিনা পাতা খেলে ফুসফুস, কোলন এবং ত্বকের ক্যানসার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

পুদিনা পাতা চেবালে মুখগহ্বর ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। পুদিনা দেয় তরতাজা শ্বাসের অনুভব। মুখের জীবাণু নষ্ট করতে সাহায্য করে পুদিনা। মাড়ি হয় স্বাস্থ্যকর।

স্মৃতি বাড়াতে পুদিনা। গবেষণা বলছে, ব্রেনের বৌদ্ধিক কার্যকলাপ বৃদ্ধিতে পুদিনা কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। বাড়ে সচেতনতা।

ওজন কমাতে কার্যকরী পুদিনা। পুদিনার উপাদানে বাড়ে হজমক্ষমতা। খাবার থেকে পুষ্টিকর উপাদান সংগ্রহ ক্ষমতা বাড়ে। বাড়ে পরিপাক ক্ষমতা। ওজন কমাতে সহায়তা করে যা।

পুদিনা পেট খারাপ বা বদহজম নিরাময়ে সাহায্য করে।

মস্তিষ্ক সচল রাখতেও সাহায্য করে পুদিনা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে স্মৃতিশক্তি ভাল করে পেপারমিন্টের সুগন্ধ।

ব্রেস্টফিডিং করান যে সমস্ত মায়েরা, পুদিনা পাতা তাদের পক্ষেও উপকারী। পরীক্ষায় দেখা গেছে, ত্বকে পুদিনা পাতার প্রলেপ লাগালে ব্রেস্টফিডিংয়ের ফলে যে ব্যথা অনুভূত হয়, তা অনেকটাই কমে যায়।

পুদিনা বা মিন্ট ফ্লেভারের চিউইং গাম মুখের দুর্গন্ধ রুখতে কাজে লাগে।

যদিও মিন্ট বিভিন্ন খাবার বা ডেজার্টে দেওয়া যায়, তবে সমীক্ষা বলছে মিন্ট ক্যাপসুল বা অ্যারোমাথেরাপির মাধ্যমে নেওয়া মিন্টই বেশি উপকারী।

হজমে সহায়তা করে। অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, মেন্থল ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস সমৃদ্ধ পুদিনা। খাবার হজম করতে যা সহায়তা করে থাকে। পুদিনায় রয়েছে ব্যাকটেরিয়া-রোধী ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। যা পাকস্থলীতে যন্ত্রণা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে সহায়তা করে।

অ্যাজমা সারাতে উপকারী পুদিনা। প্রত্যহ পুদিনার ব্যবহার বুকের রুদ্ধভাব কমাতে সহায়তা করে। ফুসফুসের শ্লেষ্মার 'কর্তৃত্ব' খর্ব করে পুদিনার মিথানল। শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক করে। তবে, খেয়াল রাখতে হবে, পুদিনার ওভারডোজ যেন না হয়ে যায়।

মাথার যন্ত্রণা সারায়। পুদিনার মেন্থল মাসল শিথিল করতে সাহায্য করে। যন্ত্রণা কমায়। পুদিনার নির্যাস কপালে লাগালে উপশম হয়। পুদিনার তেলও উপকারী।

চাপ কমায়, হতাশা রোধে সহায়তা করে পুদিনা। শরীর ও মনে তরতাজা ভাব ফিরিয়ে আনে। পুদিনা এসেনশিয়াল অয়েল শুঁকলে রক্তে সেরোটোনিন রিলিজ হয়। চাপ ও হতাশা রোধে ভীষণ উপকারী।

ত্বকের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে পুদিনা। ব্রণর উপশমে পুদিনার জুড়ি নেই। পুদিনায় আছে অধিকমাত্রায় স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। যা ব্রণ-রোধী। পুদিনার উপাদানে ত্বক পরিষ্কার রাখে। ত্বকের ময়েশ্চার বজায় রাখে। মৃত কোশ নষ্ট করে।

এছাড়া ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে এবং কড়া পড়া অংশ স্বাভাবিক করতেও পুদিনা পাতা ভালো কাজ দেয়। সেক্ষেত্রে, এক টেবিল চামচ ওটস, ১০-১২টি পুদিনা পাতা, এক টেবিল চামচ মধু, দুই টেবিল চামচ দুধ ও আধা ইঞ্চি শসার টুকরা লাগবে। প্রথমে পুদিনা পাতার সঙ্গে শসা কুচি ছেঁচে নিন। এরপর বাকি সব উপাদান একসঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ৭ মিনিট অপেক্ষা করে গোলাকারভাবে হালকা চাপে স্ক্রাব বা ঘষে নিন। এবং দুইতিন মিনিট স্ক্রাব করার পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে মৃতকোষ দূর হবে ও লোমকূপ পরিষ্কার হবে। ফলে ত্বক হবে মসৃণ, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।

(ঢাকাটাইমস/২৯ মে/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :