প্রাক্তন স্বামী রাজের প্রতি এখনো ‘মায়া’ আছে পরীমনির! সে কারণেই…

ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন পরীমনি ও শরীফুল রাজ। পুত্রসন্তানের অভিভাবকও হয়েছেন দুই তারকা। কিন্তু সন্তানের বন্ধন টেকাতে পারেনি তাদের সংসার। কয়েক মাস আলাদা থাকার পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠান পরীমনি। আলাদা হয়ে যায় দুজনের পথ।
এরপর কেটে গেছে আরও কয়েক মাস। কিন্তু এখনো প্রাক্তন স্বামী রাজের প্রতি ‘মায়া’ আছে আলোচিত নায়িকা পরীমনির। তাই তো সম্প্রতি রাজ পরীমনির বাসায় গেলে তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানান নায়িকা। অর্থাৎ, বাসায় ঢুকতে দেন প্রাক্তন স্বামীকে। ভালো-মন্দ রান্না করেও খাইয়ে দেন।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরীমনিই এসব কথা জানান।
অভিনেত্রীর দাবি, ‘অন্য একটি বিষয়ের জন্য রাজ বাসায় এসেছিল। বিচ্ছেদ হওয়ার পর আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি দেখা করতেও চাইনি। বাসায়ও আসা মানা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছুদিন আগে আমার বাসায় এসেছিল। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আমার বাসায় ছিল। সেগুলো আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম। কয়েকজনকে সঙ্গে করে এসে নিয়ে গেছে। অনেকক্ষণ ছিল। এলে তো আর বের করে দিতে পারি না।’
ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছে কি না- এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, ‘হ্যাঁ, দেখা তো হবেই। পুণ্য তো তারও সন্তান। আমি রান্না করেছিলাম। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি। এই আরকি।’
তাহলে কি দুজনের সম্পর্কের জায়গাটা উষ্ণ হয়েছে? পরীমনি বলেন, ‘উষ্ণের কী আছে। উষ্ণ তো হতেই পারত, কিন্তু সেটি মেইনটেইন করেনি রাজ। এই শহরে অনেকেরই তো বিচ্ছেদ হয়েছে, হয়। সন্তানকে ঘিরে কি বিচ্ছেদ বাবা-মায়ের দেখা-সাক্ষাৎ হয় না? কথা হয় না? সন্তানকে ঘিরে সুন্দর সময়ও কাটে না বাবা-মায়ের?’
নায়িকার অভিযোগ, ‘রাজের বিষয়টি ভিন্ন। ও বাচ্চাকে সময় দেয়নি। সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়নি। শখ করেও কোনো দিন সন্তানকে খেলনা পর্যন্ত কিনে দিতে দেখলাম না। ঠিকমতো খবরই তো রাখেনি। আমার মনে হয়, সন্তানের মর্মই ও বোঝে না।’
পরীমনি আরও বলেন, ‘কয়েক দিন তো দেখলাম। রাজ পুণ্যকে কোলে নিতে চাইলে ওভাবে রাজকে বাবা হিসেবে চিনতে পারে না এখন। অথচ আগে রাজ ছাড়া পুণ্য কিছুই বুঝতো না। এটি রাজের জন্য নির্মম।’
ক্ষোভপ্রকাশ করে নায়িকার মন্তব্য, ‘সব কথার শেষ কথা, রাজের সাফল্যেও আমার যায় আসে না, ব্যর্থতাতেও নয়। সে তো আমার জীবনে অতীত। সে এখন আমার কাছে ঘৃণার পাত্র।’
তবে ঘৃণা করলেও রাজকে সঠিকভাবে জীবনযাপনের পরামর্শ দেন পরীমনি। বলেন, ‘অনেক কিছুই তো শুনি রাজকে নিয়ে। এমন কোনো কাজ যেন বাবা হিসেবে রাজ না করে, যাতে বড় হয়ে সবার কাছে ছোট হয় সন্তান। কারণ, সন্তানের বাবা হিসেবে রাজকে তো আর অস্বীকার করতে পারব না।’
এদিকে সম্প্রতি ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’ অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দেখা যায় রাজ-পরীকে। এ ব্যাপারে পরীমনি বলেন, ‘আমি তো তাকে কাছে ডাকিনি। সে-ই এসেছিল। ওখানে মিশা ভাইসহ কয়েকজন সিনিয়রও ছিলেন। তার আচরণে আমি বিব্রত হয়েছি। সে নাকি ছেলেকে দেখার জন্য আমার কাছে এসেছিল।’
অথচ কয়েক মাস আগে একই অনুষ্ঠানে দুজনের আমন্ত্রণ থাকলে পরস্পর জানতে পারলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেন না পরীমনি। কিন্তু ইদানীং সেই চিত্র পাল্টেছে বলে গুঞ্জন। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে তাদের দেখা গেছে। তবে কি রাজের প্রতি পরীমনির নতুন করে মায়া তৈরি হয়েছে?
নায়িকা বলেন, ‘মায়া আছে বলেই তো বাসায় এলে ঢুকতে দিয়েছি। হাজার হলেও সে আমার সন্তানের বাবা। তাই বলে সে চাইলেই সব সময় বাসায় আসতে পারবে না। তার প্রতি আমার ঘৃণা থাকতেই পারে। তবে সে যেখানেই থাকুক, ভালো ভালো কাজ করুক, ভালো থাকুক। কারণ, সন্তানের সুন্দর জীবনের জন্য বাবাকেও ভালো থাকতে হয়।’
২০২১ সালে ‘গুণীন’ সিনেমাটি করতে গিয়ে প্রেম হয় রাজ-পরীমনির। মাত্র এক সপ্তাহের পরিচয়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর রাজদের আফতাবনগরের বাসায় গোপনে বিয়েও করেন। সে খবর প্রকাশ করেন ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি। একই সঙ্গে জানান, তারা সন্তানের অভিভাবক হতে যাচ্ছেন।
এরপর ২০২২ সালের ১০ আগস্ট পৃথিবীতে আসে রাজ-পরীর সন্তান শাহীম মোহাম্মদ রাজ্য ওরফে পূণ্য। এর কয়েক মাস পর থেকেই তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে তা এমন জটিল হয় যে, গত বছরের মার্চে পরীমনির বাসা ছেড়ে চিরদিনের জন্য বেরিয়ে যান রাজ।
এর থেকে সাবেক এই তারকা দম্পতি আলাদা থাকছিলেন। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিল যে, তাদের সম্পর্কের বরফ গলছে, তারা এবার এক হতে চলেছেন। কিন্তু তা আর হয়নি। কয়েক মাস আলাদা থাকার পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেন পরীমনি।
(ঢাকাটাইমস/৩০মে/এজে)

মন্তব্য করুন