পোস্তায় চামড়ার দাম ৭০০-৮০০ টাকা

চামড়ার রাজধানী খ্যাত রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় এবার মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম ৭০০-৮০০ টাকার মধ্যে। তবে গড়ের তুলনায় চামড়ার সাইজ বড় হলে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে চামড়ার দাম।
সোমবার সকালে ঈদের নামাজের পর থেকে পশু কোরবানি শুরু করে মুসুল্লিরা। কোরবানি দাতারা চামড়ার দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও এবার লাভের আশা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
এবার চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম ছিল প্রতিবর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা। যা গত বছর ছিলো ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
নতুন দর অনুযায়ী, রাজধানীতে প্রতি পিস গরুর চামড়ার দাম সর্বনিম্ন ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে পোস্তার আড়ৎদাররা বলছেন, শ্রমিক মজুরি বেশি হওয়া এবং লবনের খরচ বাদ দিয়ে তারা ৯০০ টাকার বেশি দিতে পারছেন না। মূলত এ কারণেই মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনভর আরও কম দামে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। এরপর বিকাল থেকে পোস্তায় শুরু হয় চামড়া বেচা-কেনা।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ী আমির হোসেন বিকালে এক ট্রাক চামড়া নিয়ে এসেছেন পোস্তায়। এবার গরুর চামড়া বিক্রি করে হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়নি তাকে।
চামড়ার দাম কেমন পাচ্ছেন জানতে চাইলে আমির বলেন, ‘দাম ঠিক আছে। ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত দাম দিচ্ছে। সাইজ যেটা ভালো, সেটা আরেকটু বেশি দিচ্ছে।’
পোস্তা এলাকার আড়তদার মো. শাহাদত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রতি পিস চামড়া সংরক্ষণের ব্যয় ৩০০ টাকার ওপরে পড়ে যাবে। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় মাঝারি আকারের ২৫ বর্গফুটের লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৩৭৫ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাব থেকে লবণ, মজুরি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ২৫০ টাকা বাদ দিলে ওই চামড়ার আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা।’
তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, পোস্তায় ৭০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় চামড়া কিনছেন আড়ৎদাররা।
২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুট দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা। এরপর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। এই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বড় ধরনের ধস নামে। ন্যূনতম দাম না পেয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে রাখতে দেখা যায়। এমনকি অনেকে চামড়া বিক্রি না করে মাটিতে পুঁতে ফেলে। এতে ওই বছর প্রায় ২৪২ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়। পরের বছর সরকার তৎপর হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা কিছুটা রোধ হয়। তবে দাম কমে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম দাঁড়ায় ৩৫-৪০ টাকা। তারপর গত তিন বছর সরকার নির্ধারিত দাম কিছুটা বাড়লেও কোরবানির চামড়া বিক্রি হয়েছে সেই তুলনায় অনেক কম দামে। এ বছরও রাজধানীতে সর্বোচ্চ ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে গরুর চামড়া। তবে ঢাকার বাইরের এলাকার কোরবানি দাতারা এর থেকেও কম দাম পেয়েছেন।
এবার চামড়ার দাম পেতে পারেন ব্যবসায়ীরা
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/এসআইএস)

মন্তব্য করুন