সর্বজনীন পেনশনে অনীহা কেন, যা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকনেতারা

শেখ শাকিল হোসেন, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২৪, ০৮:২৯
অ- অ+

সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি মানছেন না বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সংগঠনগুলো। আগের পেনশন স্কিম চালু রাখা এবং পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবিও জানিয়ে আসছেন তারা।

এসব দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিগুলোকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। ছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে কর্মবিরতিও পালন করছেন শিক্ষকরা।

সবশেষ এখনও বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। চলমান কর্মসূচির আওতায় আগামী ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তবে পরীক্ষাগুলো কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

ছাড়াও আগামী জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। কর্মবিরতির আওতায় ক্লাস, পরীক্ষা, দাপ্তরিক কাজসহ সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে শিক্ষকনেতারা জানিয়েছেন।

কিন্তু সর্বজনীন পেনশনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অনীহা কেন? শিক্ষকনেতারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত করলে শিক্ষকরা বিদ্যমান আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক . মো. আখতারুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পেনশন শব্দটি আর্থিক বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটা সরাসরি শিক্ষকদের আর্থিক ব্যাপার। যেটা (পেনশন স্কিম) প্রোপোজ করা হয়েছে, সেটা প্রতারণার শামিল। অপেক্ষাকৃত কম আর্থিক সুবিধা কেউই চাইবে না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে একটি চক্র কাজ করছে। তারা চাচ্ছেন না যে কোনো মেধাবী ছাত্র এখানে থাকুক। বিষয়টি চরমষড়যন্ত্রমূলকবলে আমার মনে হচ্ছে।

ফেডারেশনের মহাসচিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক . মো. নিজামুল হক ভূইয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পূর্বের পেনশন ব্যবস্থায় একজন শিক্ষক অবসরের পর এককালীন ৮০-৮১ লাখ টাকা পেতেন। এই স্কিমে সেটা নাই। সরকারি কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে আমাদের এই পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। যদিও বলা হচ্ছে আগামী বছর তাদের জন্যও সর্বজনীন পেনশনের স্কিম চালু করা হবে। সেখানে তাদের কেমন সুযোগ-সুবিধা থাকবে, সেটাতো আমরা জানি না। আমরা একই ব্যবস্থার আওতায় ছিলাম। হঠাৎ করে আমাদের বের করে দেওয়া হলো এবং উনারা নাকি পরের বছর যোগ দেবেন। সুতরাং, সবজায়গা আমরা শুভঙ্করের ফাঁকি দেখতে পাচ্ছি। কারণেই আমরা এটি প্রত্যাখ্যান করলাম।

এর আগে ২৬ মে পালিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক . জিনাত হুদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কলম-বই নিয়েই ক্লাসরুমে থাকতে চায়। কিন্তু আরোপিত অন্যায় প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে তা আমাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে।

অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘এই প্রত্যয় স্কিমের ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবে না। যেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা খাতকে সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর বলেছেন, সেখানেই আজকে সবচেয়ে বেশি কর্তন করা হচ্ছে। শিক্ষা খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আমরা চাই, স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় স্মার্ট দেশ গড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রত্যয় স্কিম বাতিল করতে হবে।

গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জুলাই থেকে নিয়োগ পাওয়ারা এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এসকে/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকাসহ দেশের ১০ অঞ্চলে দুপুরে মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড় হতে পারে, নদীবন্দরে সতর্কতা
আম খেলে হার্ট থাকবে সুস্থ, দ্রুত কমবে ওজন
ঈদুল আজহায় বিউটি ও টয় প্রডাক্টে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে সুন্দরা
গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় ৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা