টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস নাকি ভারতের শিরোপা পুনরুদ্ধার

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ জুন ২০২৪, ১২:২২
অ- অ+

দেখতে দেখতে শেষের দিকে চলে এসেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের মাঠের লড়াই। আজ শনিবার (২৯ জুন) ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়েই পর্দা নামবে টুর্নামেন্টের নবম আসরের। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮ টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচটি।

ইতিমধ্যে এই ম্যাচটি নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। সবাই অপেক্ষা করছে জমজমাট লড়াই দেখতে। কেননা দুই দলই এবারের আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত। কেউ এখনও হারেনি একটি ম্যাচও। দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের কাছাকাছি গেলেও ভারত সব দলের বিপক্ষে দাপটের সঙ্গেই লড়াই করে এসেছে। তাই বলা যায় শিরোপানির্ধারণীর ম্যাচে আসরের দুটি সেরা দলই খেলবে আর তাদের লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে গোটা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে এই ফাইনালে রয়েছে বৃষ্টির চোখ রাঙানি যদিও রয়েছে রিজার্ভ ডে।

দশ বছর পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাঠে হওয়া সবশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে গিয়েও জিততে পারেনি ভারত। এবার ফরম্যাট ভিন্ন হলেও ২০১১ সালের পর আবারও বিশ্বকাপ পেতে মরিয়া তারা।

আর দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডেতে এর আগে পাঁচবার ও টি-টোয়েন্টিতে দুবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় জুটেছিল চোকার দুর্নাম। সেমির গেরো খুলে প্রোটিয়ারা উঠে এসেছে ফাইনালে। শিরোপা পেতে মরিয়া দুদলের লড়াইটা তাই হবে জমজমাট। সেমিফাইনাল মঞ্চে দুই দলই খেলেছে দাপুটে ক্রিকেট।

ফাইনাল জিতে নিজেদের সেরা প্রমাণ করার তাড়নাটা থাকবে দুই দলের সব খেলোয়াড়ের মধ্যেই। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক টুর্নামেন্ট জুড়ে আছেন দারুণ ফর্মে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংগ্রহ তার; ৮ ইনিংসে করেছেন ২০৪ রান। আছে দুটি ফিফটি। সেমিতে বলার মতো কিছু করতে পারেননি। তবে ফাইনালে ডি কক জ্বলে উঠলে যে ভারতের জন্য বিপদ তা আর বলার প্রয়োজন নেই। নতুন বলে ডি কককে থামাতে বড় ভূমিকা রাখতে হবে ভারতের তুরুপের তাস জাসপ্রিত বুমরার। এই বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। চলতি বিশ্বকাপে ভারতের শীর্ষ উইকেটশিকারি বুমরা নন।

নতুন বলে তার সঙ্গী আর্শদীপ সিং নিয়েছেন ১৫ উইকেট। তবে বুমরার ইকোনমি দারুণ। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৪.১২। প্রোটিয়াদের ইনিংসের শুরুটা করেন ডি কক। বুমরা সাধারণত ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বল করতে আসেন। তাই বুমরাকে সামলানো চ্যালেঞ্জ হতে পারে ডি ককের জন্য। বুমরা-ডি কক লড়াইয়ে এগিয়ে বুমরা। তার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হননি ডি কক। তবে ফ্রাঞ্চাইজি লিগে বুমরার বিপক্ষে ৪ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছেন ডি কক। ১০ বলে করেছেন ৮ রান। বুমরার বলে আউট হয়েছেন একবার। সবশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ^কাপে বুমরার ৬ বল খেলে মাত্র ১ রান করতে পারেন ডি কক।

ডি ককের মতো ভারতীয় কাপ্তান ও ওপেনার রোহিত শর্মাও আছেন ফর্মে। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪১ বলে ৯২ রানের ইনিংস। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও খেলেন ৫৭ রানের ইনিংস। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তার দখলে। ৭ ইনিংসে করেছেন ২৪৮। সুযোগ আছে শীর্ষে থাকা আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজকে (২৮১) ছাড়িয়ে যাওয়ার। তবে রোহিতকে সতর্ক থাকতে হবে প্রোটিয়া পেস আক্রমণের বিপক্ষে বিশেষ করে আনরিখ নরকিয়াকে বুঝেশুনে খেলতে চাইবেন ভারত অধিনায়ক। নরকিয়া এখন পর্যন্ত ৮ ইনিংসে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬ করে।

আইপিএলে রোহিত পাঁচবার নরকিয়ার মুখোমুখি হয়ে ২৪ বলে করেছেন ৩৭ রান। দুবার আউট হয়েছেন। তবে রোহিত ভারতের হয়ে দুই ম্যাচে তাকে আউট করতে পারেননি নরকিয়া। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০ বল খেলে ২৩ রান নিয়েছেন রোহিত। এই পরিসংখ্যানটা যে বদলাতে চাইবেন নরকিয়া, তা বলাই যায়।

ভারতের ব্যাটিং অর্ডারের অন্যতম ভরসা সূর্যকুমার যাদব। চলতি বিশ্বকাপে ৭ ইনিংসে ১৩৭.০৬ স্ট্রাইক রেটে ১৯৬ রান করেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সূর্যকুমারের ব্যাট বিস্ফোরিত হয়েছে বারবার। ৬ ম্যাচের চারটিতেই ফিফটি করেছেন। সেঞ্চুরি রয়েছে এক ম্যাচে। সূর্যকুমার আগের ফর্মটা টেনে আনতে পারলে আজ ভুগতে হবে প্রোটিয়াদের। সূর্যের বিস্ফোরণ থামাতে কার্যকর হয়ে উঠতে পারেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাবরিজ শামসি। ৪ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করে আজ ফাইনালে খেলতে নামবেন তিনি। সেমিফাইনালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ রানে ৩ উইকেট নেন।

এই বিশ্বকাপে দারুণ বোলিং করছেন ভারতীয় বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদবও। চার ম্যাচে তার শিকারসংখ্যা ১০ উইকেট। ওভারপ্রতি রান খরচা ৫.৮৭ করে। সাধারণত প্রথম পাওয়ার প্লের শেষে অষ্টম কিংবা নবম ওভার থেকে কুলদীপ বল করা শুরু করেন। দ্রুত উইকেট হারালে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডারকে সামলাতে হবে কুলদীপের ভেলকি। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে ডেভিড মিলারকে। ‘কিলার’ মিলার এবারের বিশ্বকাপে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি।

গ্রুপ পর্বে একটি ফিফটির পর সুপার এইটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪৩ রানের ইনিংস। তবে মিলার জ্বলে উঠলে যে রানবন্যা হয় তা তো অতীতেও দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মিলার দুবার কুলদীপের মুখোমুখি হয়ে ১০ বল খেলে করেছেন ১০ রান। মিলারকে একবার আউট করেছেন কুলদীপ।

তবে শিরোপা নির্ধারণীর এই ম্যাচেও রয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা। ক্রিকেট ভিত্তিক গণমাধ্যম ইয়েসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদন অনুসারে ফাইনাল ম্যাচে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আজ খেলা শেষ করার জন্য ১৯০ মিনিট অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করা রয়েছে। বিজয়ী ঘোষণার জন্য উভয় দলকে কমপক্ষে ১০ ওভার ব্যাট করতে হবে। তবে যদি খেলা মাঠে না গড়ায় তাহলে এই খেলাটি গড়াবে রবিবার। ম্যাচের দিনের মতো রিজার্ভ ডেতেও খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৮টায়।

(ঢাকাটাইমস/২৯ জুন/এনবিডব্লিউ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেওয়া হবে: শেহবাজ শরিফ
হাসপাতাল থেকে মাকে নিয়ে বাসায় গেলেন ডা. জোবাইদা রহমান
পাকিস্তানের সব বিমানবন্দর ও আকাশসীমা চালু আছে: পিএএ
একনেকে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা