আলফাডাঙ্গায় দেয়ালের বুকে নতুন দেশ গড়তে রংতুলির আঁচড়

ইট-সুরকির পলেস্তারার আস্তরণের ওপর দৃশ্যমান হচ্ছে গ্রাফিতি, ক্যালিওগ্রাফি ও নানা রকম পেইন্টিং। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ত্যাগ, আত্মাহুতি ও সফলতার গল্পগাথা স্মরণীয় করে রাখতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দেয়ালে আঁকছেন চিত্রকর্ম। দেশ গড়তে প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
জেলা-উপজেলার সড়কের পাশের দেয়ালগুলোতে নানা চিত্র আঁকতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের রংতুলির ছোঁয়ায় যেন প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ইট-সিমেন্টের দেয়ালগুলো।
শনি-রবি ও সোমবারে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা সড়কের পাশের দেয়াল ও দরজায় শিক্ষার্থীদের তুলির ছোঁয়ায় শুরু হয়েছে চিত্রাঙ্কন। শিক্ষার্থীরা অপরিচ্ছন্ন ও রাজনৈতিক স্লোগান লেখা দেয়ালগুলো পানি দিয়ে পরিষ্কার করে রং করেছেন। পরিষ্কারের পর তুলির আঁচড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা, আরবি ক্যালিওগ্রাফি, প্রতিবাদ, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও দেশপ্রেমের বার্তা লিখেছেন। তাদের চোখে-মুখে আলফাডাঙ্গাকে মনের মতো করে সাজানোর স্বপ্ন স্পষ্ট।
শনিবার উপজেলা সড়কে গিয়ে দেখা যায়, রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিত্রাঙ্কন করেছেন। কেউ দেয়ালে লাগানো পোস্টার তুলছেন, কেউ ব্রাশ দিয়ে দেয়ালে রং করছেন। সেই রংয়ে শিক্ষার্থীরা দেশের মানচিত্র, শিক্ষামূলক ও আরবি ক্যালিওগ্রাফি সহ উপদেশমূলক বিভিন্ন বাণী লিখছেন। যারা এসব কাজে জড়িত রয়েছেন, তাদের সবার মুখেই দেশ গড়ার নতুন প্রত্যয়।
ঢাকার এক কলেজের ছাত্রী রিফা তাসনিয়া জেরিন, ফরিদপুর সরকারি ইয়াসিন কলেজের ছাত্র মাজহারুল ইসলাম মাহমুদ, আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্র শেখ রিশাদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাদুজ্জামান স্বচ্ছ ও ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র ফজলে রাব্বিসহ অন্য শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘তারা দেশের মানুষকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চান যখন রাষ্ট্রকে সংস্কার করতে হবে, তখন অবশ্যই শিল্পকে সামনে রেখে এ কাজ করতে হবে। যদি সংস্কৃতির সংস্কার না করতে পারি, তাহলে রাষ্ট্রের যে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার তা আমরা করতে পারব না।’
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ সবার, এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা আগামীতে সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই। ছাত্রসমাজ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়েছে।’আলফাডাঙ্গার বাসিন্দা ক্লিনিক ব্যবসায়ী হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা হলে আশা করি দেশটা পরিচ্ছন্ন ও অনেক সুন্দর হবে। সে জন্য তাদের যা যা সহযোগিতা দরকার করবো। প্রশাসনও তাদের সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন তিনি।
আলফাডাঙ্গা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমীন ইয়াছমীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ কাজ অত্যন্ত মহৎ। ভালো কাজে সবার সহযোগিতা করা দরকার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তারা শিক্ষার্থীদের পাশে আছেন।’
(ঢাকা টাইমস/২১আগস্ট/এসএ)

মন্তব্য করুন