মানিকগঞ্জে সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের কান্ঠাপাড়া থেকে বহলাতলী বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কে সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইটের খোয়া এতটাই নিম্নমানের যে, রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দীর্ঘ ৭-৮ বছর পর এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এতে ব্যবহৃত খোয়া অত্যন্ত দুর্বল-হাতেই চিপা দিলে গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় খোয়া সঠিকভাবে বসানো হয়নি, আবার রাস্তায় স্লোব করতে এখন পর্যন্ত মাটি ব্যবহার না করারও অভিযোগ রয়েছে।
এই সড়কটি চালা ইউনিয়নের পাশাপাশি সট্টি, খাবাশপুর, সুলতানপুর, বৈন্যা, খলিলপুর, আদাসরী, করিমকান্দি, পিপুলিয়া ও কান্ঠাপাড়াসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষের প্রধান যাতায়াত পথ। প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাচল করে শত শত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষিপণ্যবাহী যানবাহন, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের (জিওবি মেইনটেনেন্স) প্রকল্পের আওতায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির সংস্কার কাজের জন্য ২০২৩ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঘিওর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীর এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৬৮৫ টাকায় কাজটি পায়। কাজটি শুরু হয় ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি, ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বহলাতলী বাজার থেকে কবি জাহানারা আরজু উচ্চ বিদ্যালয় মোড় পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কে যে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে, তা নিম্নমানের এবং রোলার চালানোর পরই ভেঙে পাউডারের মতো হয়ে গেছে। সড়কের দুপাশে স্লোব করতে মাটি ব্যবহার না করায় রাস্তার দুপাশ খাড়া ঢালু অবস্থায় রয়েছে। তবে প্রতিরোধের মুখে কিছু জায়গায় ভালো মানের খোয়া ব্যবহার করা হলেও তা লোক দেখানো বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বহলাতলী গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ জানান, বহু বছর ধরে আমরা কষ্ট করছি এই রাস্তায় চলাচল করে। যখন সংস্কার শুরু হলো, ভেবেছিলাম দুর্ভোগের অবসান হবে। কিন্তু যে মানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে কয়েক মাসও টিকবে না মনে হচ্ছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীর এন্টারপ্রাইজের মালিক মীর মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, আমি সড়ক নির্মাণে পিকেট ইটের খোয়া ব্যবহার করছি। আমি কেন নিম্নমানের খোয়া দিব। যে ইট দেয়া হয়েছে, তা সরকারি ইট।
তবে এলজিইডির পক্ষ থেকে নিম্নমানের খোয়া সরিয়ে নিতে কোনো নির্দেশনা পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কোনো নোটিশ পাইনি। কাজ নিয়েও কর্তৃপক্ষের কোনো অভিযোগ নেই।
জেলা এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, নিম্নমানের খোয়ার বিষয়টি জানার পর ঠিকাদারকে তিন দিনের মধ্যে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কাজ নিয়মিত তদারকি করা হবে। রাস্তায় মাটি ফেলার পর ঠিকাদারকে বিল দেয়া হবে। ঠিকাদার যদি এলজিইডির নির্দেশনা না মানে তাহলে তার কাজ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
(ঢাকা টাইমস/১৮মে/এসএ)

মন্তব্য করুন