সংখ্যালঘু কাউকে আক্রমণ করা হলে কোনো ছাড় নয়: শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল
বিএনপি অত্যাচারী দল নয় মন্তব্য করে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন। বলেন, ‘বিএনপি অত্যাচারী দল নয়। মানুষের সম্পদ লোটার মতো ঘৃণিত কাজও করে না। দলের কেউ যদি সংখ্যালঘু কাউকে আক্রমণ করলে ছাড় দেওয়া হবে না। এ ধরনের কাজে জড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌর শহরের হরি সভায় শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ইকবাল বলেন, ‘কেউ যদি এ ধরনের কাজ করেন বা জড়িত থাকেন তাহলে সতর্ক হয়ে যান। অভিযোগ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
এসময় তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নানা নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘দীর্ঘ সতেরো বছর এই বাজিতপুরেই আওয়ামী লীগ কম অত্যাচার করেনি। হামলা-মামলা করে জেলেও নিয়েছে।’
‘শত শত মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদেরও জেলে দিয়েছে। মিথ্যা মামলার কারণে আমাদের নেতাকর্মীরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি। নদী-জঙ্গলে পালিয়ে বেড়িয়েছে। তাদের ভিতরে জ্বালা আছে। কিন্তু সতেরো বছরের ঘা একদিনে সারতে চাইলে তো হবে না, সারবেও না।’
দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্ধৃত করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় সদস্য বলেন, ‘আমাদের দল, আমাদের নেতা বলে দিয়েছেন কোথাও কোনো জুলুম হতে পারবে না। কোথাও কোনো অত্যাচার হতে পারবে না। কারণ জাতীয়তাবাদী দল অত্যাচারী দল নয়।’
‘আমাদের দলের নির্দেশনা আছে, কোনো নিরপরাধ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না। হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান বুঝি না, আমরা বুঝি আমরা সকলে একসঙ্গে বসবাস করা লোক।’
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বাড়াবাড়ি রকমের খবরের সমালোচনা করেন শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল। বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করবেন, ইদানীং ভারতের টিভি চ্যানেলে এমনভাবে প্রচার করছে যে, হাজার হাজার হিন্দু এ দেশ থেকে পালিয়ে বর্ডারে চলে গেছে। অথচ এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, তা আপনারাও জানেন।’ তিনি এ ধরনের অপপ্রচার থেকে সজাগ থাকার জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ উপস্থিত সকলকে আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘কোমলমতি ছাত্ররা আন্দোলন করে আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। সাঈদ তার রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছে কীভাবে দেশটাকে স্বাধীন করা যায়। সতেরো বছর আন্দোলন করে আমরা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে পারি নাই, কিন্তু আমাদের সন্তানরা এই স্বৈরাচারকে সরিয়েছে। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার এসেছে। তাদের সহায়তা করা আমাদের দায়িত্ব, সেনাবাহিনী এসেছে তাদের সহযোগিতা করাও আমাদের দায়িত্ব। ঈমানী দায়িত্ব।’
শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, ‘স্বৈরাচার একজন চলে গেছে কিন্তু বাকিরা আছে। তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ষড়যন্ত্র কিন্তু চলছে।’
শ্রী শ্রী হরিসভার সভাপতি সাবেক অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রাষ্ট্র সংস্কার ও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির, পৌর বিএনপির সভাপতি এহসান কুফিয়া, বিএনপি নেতা কাইয়ুম খান হেলাল, উপজেলা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য সচিব জহিরুল হক কাজল, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম মাহমুদ জসিম, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ভুঁইয়া মঞ্জু ও বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ জামিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/পিএস)