আওয়ামী লীগ শতশত ছাত্রজনতাকে হত্যা করে দেশকে কলঙ্কিত করেছে : সেলিম উদ্দিন
ছাত্র-জনতার আগস্ট বিপ্লবকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে ন্যায়-ইনসাফ তথা জাস্টিস প্রতিষ্ঠায় রুকনসহ সব স্তরের জনশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
রবিবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডার সানজি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রামপুরা-বাড্ডা জোন আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা কুতুবউদ্দিন, আব্দুস সবুর ফরহাদ, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, মাওলানা আব্দুল লতিফ ও মাসুদুর রহমান রানা প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা অপশাসন-দুঃশাসন চালিয়ে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রের মুখোমুখি করেছে। তারা মানুষকে প্রাপ্য মানবীয় মর্যাদা দেয়নি বরং জামায়াতসহ বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীদেরকে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছিল। সে নির্দেশের আলোকেই তারা আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করে দেশের পবিত্র জমিনকে রীতিমত রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করেছে। এমন কোনো জুলুম-নির্যাতন নেই যা আমাদের ওপর চালানো হয়নি। তারা কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে জাতীয় নেতাদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা জামায়াতের অগ্রযাত্রা কোনোভাবেই রোধ করতে পারেনি বরং শত শাহাদাত ও জুলুম-নির্যাতনের পথ ধরেই জামায়াত অভিষ্ট লক্ষের দিকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। আগামী দিনে মানবতার মুক্তির জন্য বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।”
তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। বলেন, “জামায়াত একটি আদর্শবাদী, গণমুখী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। আমরা ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে একটি মানবিক ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে চাই। এ কাজকে গতিশীল ও অগ্রগামী করার জন্য আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে গণমানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে সব দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করার কোনো বিকল্প নেই। নিজেদের যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি কুরআন, হাদিস ও ইসলামি সাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে। দেশে একটি সফল ও স্বার্থক বিপ্লবের জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। প্রতিটি ঘরে দাওয়াত পৌঁছাতে পারলেই দ্বীন কায়েমের পথ সহজ হতে সহজতর। সফলতার জন্য আল্লাহর সাহায্য চেয়ে তাহাজ্জুদ ও নফল ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ধর্না দিতে হবে। এক্ষেত্রে গভীর রাতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তাহলেই আল্লাহর সাহায্য আমাদের ওপর অবধারিত হয়ে উঠবে।”
তিনি একটি সফল বিপ্লবের জন্য রুকনদের আরও অধিক কর্মতৎপর ও নিষ্ঠাবান হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, “শহীদদের রক্তাক্ত পথ ধরেই দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের নতুন প্রজন্ম ত্যাগের ঐতিহাসিক নজরানা পেশ করেছেন। মূলত সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদরা আমাদের জাতীয় বীর, গর্বিত ও শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের রক্তের পথ ধরেই জাতির বিজয় সোপান রচিত হয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থেই শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। শহীদদের দিতে হবে জাতীয় বীরের মর্যাদা। তাদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আহতদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুচিকিৎসাসহ সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অবদান রাখতে হবে।” তিনি শহীদদের স্বপ্ন ন্যায়বিচার ও সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় ফ্যাসিবাদ আবারো মাথাচাড়া দিতে পারে।”
(ঢাকাটাইমস/০৮সেপ্টেম্বর/জেবি/এফএ)