সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সফর নিয়ে চাঁদা আদায় করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা!

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনের সফরের খরচ মেটাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ টি এম ওবায়দুল্লাহর বিরুদ্ধে। নির্ধারিত চাঁদা না দিলে বেতন আটকে রাখার ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৩ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২০ শয্যা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
জোরপূর্বক চাঁদা আদায় নিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে জানা যায়, এই সফরের খরচ মেটাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী মিলে প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন অনুযায়ী ৪০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নির্ধারণ করেন স্বাস্থ কর্মকর্তা। এই চাঁদা কালেকশনের জন্য তার ঘনিষ্ঠ কর্মচারীকে দায়িত্ব দেন তিনি।
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএইচসিপি ও স্বাস্থ্য সহকারী জানান, স্বাস্থ্য সহকারী প্রতিজন ৪০০ টাকা ও সিএইচসিপিদের ৬০০ টাকা চাঁদার জন্য নিয়মিত চাপ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। টাকা না দিলে বেতন বন্ধ রাখার ভয় দেখাচ্ছেন।
নার্স ও চিকিৎসকরা জানান, বেতন অনুযায়ী তাদের ১০০০-৩০০০ টাকা চাঁদা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তবে তারা কেউ এখনো চাঁদা দেননি।
চাঁদা তোলার বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ টি এম ওবায়দুল্লাহ বলেন, মন্ত্রীর সফরের খরচের জন্য নয়, এটি আপ্যায়ন বিল মেটাতে নেওয়া হচ্ছে।
ডা. এ টি এম ওবায়দুল্লাহর দাবি, আপ্যায়ন বাবদ কোনো বিল সরকার থেকে পাওয়া যায় না, তাই অফিসে পরিদর্শনে আসা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অতিথিদের আপ্যায়ন মেটাতে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে চাঁদা না দিলে বেতন আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ মুঠোফোনে বলেন, কোনো ভিআইপির সফর শুধু নয় যেকোনো বিষয়ে চাঁদা তোলা নিয়মবহির্ভূত কাজ। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আপ্যায়ন বিলের বরাদ্দ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসের জন্য সামগ্রিক বিষয়ে বার্ষিক একটা বরাদ্দ থাকে, সেটা কোন খাতে ব্যয় করবে সেটা তাদের বিষয়।
(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/মোআ)

মন্তব্য করুন