‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ হচ্ছে প্রধান বিচারপতির বাসভবন
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বর্তমান বাসভবনকে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ করতে যাচ্ছে সরকার। রাজধানীর ১৯ হেয়ার রোডে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনকে ইতোমধ্যে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ ঘোষণার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেন প্রধান বিচারপতি। ওই সভায় ভবনটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে তা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার ইঙ্গিত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঐতিহসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই উদ্যোগের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেন প্রধান বিচারপতি।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৬ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (৯ অক্টোবর) প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আমিরুজ্জামান অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পরিচালককে বাসভবনটি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
ভবনটির ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলী তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ঢাকাকে পূর্ববঙ্গ ও আসামের রাজধানী করার পর উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যেসব আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল, সেসব ভবনের একটি হচ্ছে হেয়ার রোডের প্রধান বিচারপতির বাসভবন। মোঘল ও ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে ১৯০৮ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের পর ভবনটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলেও পঞ্চাশের দশক থেকে ভবনটি প্রধান বিচারপতির বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুরাকীর্তি আইন, ১৯৬৮ অনুসারে ভবনটির মালিকানা ও ব্যবহার স্বত্ব সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে রেখে সংরক্ষণ করা হলে তা জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। ১১৬ বছরের পুরনো স্থাপনাটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করা হলে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এর ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে স্থাপনাটির গুরুত্ব ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
(ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/এসআইএস)