বেনাপোলে তিন মাসে রাজস্ব কম ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা

বেনাপোল কাস্টমসে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার রাজস্ব আয় কম হয়েছে। এই প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে এক হাজার ৩০৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৫ দশমিক ৫১ শতাংশ কম।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে এই স্থলবন্দর থেকে সরকারের ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ রয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আয়ের কারণ হিসেবে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনে ব্যবসা-বাণিজ্য ছন্দপতনকে সামনে আনছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা ডলারের উচ্চমূল্যও একটি বড় কারণ বলছেন। সামনের দিনগুলোতে বাণিজ্য গতি পাবে বলে আশা করছেন তারা।
বন্দর সূত্র জানায়, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬১৫ মেট্রিক টন। আর রফতানি হয় ৯ হাজার ৬৪৯ মেট্রিক টন। এতে রাজস্ব আদায় হয় এক হাজার ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা কম।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ২৬ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পণ্য।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুল জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক বছর ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছে। বর্তমানে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়েছেন। তারা দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে আমদানি-রফতানি কারযক্রম স্বাভাবিক গতি পাবে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু জানান, গেল আগস্ট মাসে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের পরিস্থিতি কীভাবে চলবে তা পর্যবেক্ষণ করছেন ব্যবসায়ীরা। অনুকূল পরিবেশ থাকলে সামনে বাণিজ্যে গতি ফিরে আসবে।
ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, দেশে জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলন চলায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে সামনে আমদানি রফতানি বাড়বে। তখন রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গেল জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে আন্দোলন চলার কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি থেকে বিরত থেকেছেন। এখন ডলারের পরিস্থিতিও স্থিতিশীল। আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করবেন। তখন আমাদের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/মোআ)

মন্তব্য করুন